'ব্যাংকনোটের কার্পেট' বিছিয়ে পর্তুগিজ শিল্পীর অভিনব প্রতিবাদ
পর্তুগালের খ্যাতনামা স্ট্রিট আর্টিস্ট দ্বিতীয় বোরডালো লিসবনে পোপ ফ্রান্সিসের আগমনের খবরে ভেন্যুতে বিশালাকারের ব্যাংকনোটের কার্পেট বিছিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পোপের আগমন উপলক্ষে পর্তুগিজ সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয়ের সমালোচনা করতে এই অভিনব উপায় বেছে নিয়েছেন তিনি।
ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ ডে উপলক্ষে আয়োজিত ইভেন্টে যোগ দিতে আগামী ২ আগস্ট থেকে ৬ আগস্ট লিসবনে অবস্থানের কথা রয়েছে পোপ ফ্রান্সিসের। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তরুণ ক্যাথলিকরা এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করবেন এবং ধারণা করা হচ্ছে, হাজার হাজার তীর্থযাত্রী এ আয়োজন উপলক্ষে লিসবনে জড়ো হবেন।
পর্তুগিজ স্ট্রিট আর্টিস্ট দ্বিতীয় বোরডালো প্রায়ই ফেলনা জিনিসপত্র দিয়ে শিল্পকর্ম তৈরি করেন এবং সেগুলোই হয়ে ওঠে তার রাজনৈতিক প্রতিবাদের ভাষা। ব্যাংকনোট দিয়ে তৈরি কার্পেটের ছবি ও ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যায়, বড় সাইজের ৫০০ ইউরোর নোট জোড়া দিয়ে এই কার্পেট বানানো হয়েছে।
লিসবনের যেই ভেন্যুতে পোপ আসার কথা রয়েছে, বৃহস্পতিবার বোরডালো সেখানে অনুপ্রবেশ করেন এবং ভেন্যুর সিঁড়ি থেকে শুরু করে নিচে পর্যন্ত এই কার্পেট বিছিয়ে দেন। তার এই প্রতিবাদকে 'ওয়াক অব শেইম' বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
শিল্পী দ্বিতীয় বোরডালোর আসল নাম আর্তুর বোরডালো। ইনস্টাগ্রামে এই শিল্পী লেখেন, "এমন একটা সময় যখন অনেক মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি, কাজ এবং সম্মান ধরে রাখার জন্য সংগ্রাম করছে, তখন মিলিয়ন মিলিয়ন ইউরোর পাবলিক ফান্ড বিনিয়োগ করা হচ্ছে এই ট্যুর স্পন্সর করার জন্য।"
চলতি বছরের জানুয়ারিতে অফিসিয়াল হিসাব অনুযায়ী, এই ইভেন্টের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৬১ মিলিয়ন ইউরো যা পর্তুগিজ সরকার, ক্যাথলিক চার্চ এবং লিসবন ও ল্যুরেস সিটি কাউন্সিল মিলে বহন করবে।
পর্তুগালের সাধারণ নাগরিকরা যখন মূল্যস্ফীতির কারণে জীবন-জীবিকা নিয়ে সংগ্রাম করছেন, তখন এই ইভেন্টে সরকারের অংশের ৩০ মিলিয়ন ইউরো দেওয়া নিয়ে সমালোচনা করেছেন দেশটির অনেক রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট ব্যক্তি।
চলতি বছরের শুরুতে জনগণের তীব্র সমালোচনার মুখে লিসবন সিটি কাউন্সিল পোপ ফ্রান্সিসের আগমন উপলক্ষে ব্যয়ের পরিকল্পনা ৫ মিলিয়ন ইউরো থেকে কমিয়ে ২.৯ মিলিয়ন ইউরোতে নিয়ে আসে।
স্ট্রিট আর্টিস্ট বোরডালোর কার্পেটের প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে লিসবনের মেয়র কার্লোস মোয়েদাস বলেন, শিল্পী তার নিজস্ব চিন্তা প্রকাশ করতে এই পন্থা অবলম্বন করেছেন এবং এ ধরনের ইভেন্টে এরকম প্রতিবাদের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক।