বিশ্বকাপ স্কোয়াড ত্যাগের হুমকি দেননি রোনালদো: দাবি পর্তুগাল ফুটবল ফেডারেশনের
পর্তুগিজ ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর বিশ্বকাপ যাত্রাটা খুব ভালোভাবে কাটছে না। প্রথমে বীমা সংক্রান্ত জটিলতা, তারপর সাইড বেঞ্চে বসিয়ে রাখার ইস্যুতে ইতোমধ্যেই জল ঘোলা হয়েছে প্রচুর। এর সর্বশেষ সংযোজন হিসেবে গুঞ্জন উঠেছে যে, সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে শুরুর একাদশে জায়গা না পাওয়ায় বিশ্বকাপ স্কোয়াড ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন রোনালদো! যদিও পর্তুগাল ফুটবল ফেডারেশনের দাবি, রোনালদোর বিশ্বকাপ স্কোয়াড ত্যাগের হুমকি দেওয়ার এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। খবর বিবিসির।
বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচ ৬-১ এ জিতে দারুণ ছন্দে রয়েছে পর্তুগাল। কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে নিয়ে একের পর এক গুঞ্জন যেন বাড়তি অস্বস্তি হিসেবে দেখা দিয়েছে পর্তুগিজ শিবিরে। সম্প্রতি পর্তুগিজ গণমাধ্যম দ্য রেকর্ড দাবি করেছে, ম্যাচের পর পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোসের সঙ্গে নাকি উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে রোনালদোর। এসময় নাকি সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা এও হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন যে পরের ম্যাচে প্রথম একাদশে না রাখা হলে দেশে চলে যাবেন তিনি।
রোনালদোর দলে থাকা নিয়ে এত বেশি আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে যে, বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিতে হয়েছে পর্তুগাল ফুটবল ফেডারেশনকে। বিবৃতিতে পর্তুগাল ফুটবল ফেডারেশন জানায়, গণমাধ্যমে 'রোনালদো বিশ্বকাপ স্কোয়াড ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে' বলে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা সত্য নয়। দলের অধিনায়ক কাতার বিশ্বকাপকালীন কখনোই দল ত্যাগের কথা জানাননি।
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, "জাতীয় দল ও দেশের প্রতি প্রতিদিনই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো অনন্য ইতিহাস তৈরি করে চলেছে। এটা অবশ্যই সম্মানের। যা জাতীয় দলের প্রতি রোনালদোর প্রশ্নাতীত মাত্রার প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "শেষ ষোলোয় সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে দেশের হয়ে সর্বোচ্চ প্রতিনিধিত্ব করা খেলোয়াড় রোনালদোর দলের প্রতি একাগ্রতা আরেকবার প্রমাণিত হয়েছে। পর্তুগাল জাতীয় দলের সকল খেলোয়াড়, কোচ ও স্টাফরা বিশ্বকাপে ভালো ফলাফল করার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যেমনটা তারা বিশ্বকাপ যাত্রার প্রথম দিন থেকে ছিল।"
অন্যদিকে গণমাধ্যমে রোনালদোকে নিয়ে বিতর্কিত এ লেখালেখির জবাব পরোক্ষভাবে রোনালদো নিজেও দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোনালদো তার বিরুদ্ধে হওয়া সংবাদের প্রেক্ষিতে লেখেন, "একটি দল বাইরের শক্তি দ্বারা ভেঙ্গে যাওয়ার খুব কাছাকাছি। তবে এ জাতি এত সাহসী যে, নিজেকে কোনো প্রতিপক্ষের দ্বারা ভীত হতে দেয় না। এ দলটা শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের জন্য লড়াই করবে! আমাদের ওপর আস্থা রাখুন! শক্তি, পর্তুগাল!"
কিন্তু শেষ ষোলোর ম্যাচে রোনালদো শুরুর একাদশে না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার সঙ্গী জর্জিনা রদ্রিগেজ। ইন্সট্রাগ্রামে জর্জিনা লিখেছেন, "অভিনন্দন পর্তুগাল। যখন পর্তুগালের জাতীয় সংগীত চলছিলো, তখন সকলের দৃষ্টি তোমার (রোনালদো) দিকে ছিল। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়কে মাঠে ৯০ মিনিট খেলতে না দেখা লজ্জাজনক। কিন্তু তবুও দর্শকেরা তোমার (রোনালদো) নাম ধরে চিৎকার করে ডাকতে ভুলে যায়নি।"
এর আগে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে রোনালদোকে দ্বিতীয়ার্ধের ৬৪ মিনিটে মাঠ থেকে তুলে নেন কোচ সান্তোস। তখনো গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল যে, কোচের বদলির সিদ্ধান্তে খুশি হতে পারেননি পর্তুগিজ অধিনায়ক। কিন্তু পরবর্তীতে কোচ সান্তোস জানান, কোচের উপর নয় বরং প্রতিপক্ষের খেলোয়াড় রোনালদোকে মাঠ থেকে দ্রুত বের হতে বলায় অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন সিআরসেভেন।