বেলজিয়ামের দৌড় থামিয়ে সেমিতে ইতালি
প্রথমার্ধেই যা কাজ করার, করে রাখলো ইতালি। এই অর্ধে বেলজিয়ামও পেল গোলের দেখা। কিন্তু থেকে যাওয়া ব্যবধান বাকি সময়ে আর ঘোচাতে পারলেন না কেভিন ডি ব্রুইনে-রোমেলু লুকাকুরা। রক্ষণভাগ জমাট রেখে দারুণ এক জয় তুলে নিলো ইতালি, চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা উঠে গেল ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের সেমি ফাইনালে।
শুক্রবার রাতে মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারিনাতে দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইতালি। দলটির পক্ষে গোল করেন নিকোলো বারেল্লা ও লরেঞ্জো ইনসিগনে। স্পিট কিক থেকে বেলজিয়ামের পক্ষে একমাত্র গোলটি করেন রোমেলু লুকাকু।
ম্যাচে ইতালির আধিপত্যই বেশি ছিল। বল দখলের লড়াই থেকে আক্রমণ সাজানোয় এগিয়ে ছিল তারা। ৫৪ শতাংশ সময় বল নিজেদের পায়ে রাখে ইতালি। গোলমুখে তাদের নেওয়া ১৪টি শটের ৩টি ছিল লক্ষ্যে। পর্তুগালকে হারিয়ে কোয়ার্টারে ওঠা বেলজিয়াম শট নেয় ১০টি, এর মধ্যে ৪টি ছিল লক্ষ্যে।
রেফারি ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজাতেই বল নিয়ে ইতালির রক্ষণভাগে হানা দেয় বেলজিয়াম। ৫৬ সেকেন্ডেই ইতালির ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন রোমেলু লুকাকু। তবে গোল আদায় করে নিতে পারেননি বেলজিয়ান স্ট্রাইকার। পরের মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে ইতালিও পরিস্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।
১৩ তম মিনিটে গোলের দেখা পায় ইতালি। কিন্তু লিওনার্দো বোনুচ্চির গোলটি অফসাইটের কারণে বাতিল হয়ে যায়। ২২ তম মিনিটে বেলজিয়াম গোছালো আক্রমণ সাজায়। ডি-বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ে অসাধারণ শট নেন কেভিন ডি ব্রুইনে। বেলজিয়ান মিড ফিল্ডারের শট অসাধারণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরান ইতালির গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোনারুমা।
চার মিনিট পর বেলজিয়ামের আরেকটি দারুণ আক্রমণ। নিজেদের রক্ষণ থেকে বল নিয়ে একাই ছুটে যান ডি ব্রুইনে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে লুকাকুকে বল বাড়ান তিনি। ডি-বক্সে বাঁ পায়ে দারুণ শট নেন লুকাকু। এবারও ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ফেরান দোনারুমা। তবে দলকে পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে পারেননি তিনি। ইতালির রক্ষণভাগের খেলোয়াড় কর্নারের বিনিময়ে বল পরিষ্কার করেন।
৩১তম মিনিটে এগিয়ে যায় ইতালি। দারুণ আক্রমণে বেলজিয়ামের ডি-বক্সে ঢুকে বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি তারা। তৈরি হয় জটলা, সেখান বল পান নিকোলো বারেল্লা। ডান পায়ের শটে বল জালে জড়ান ইতালিয়ান এই মিড ফিল্ডার। ৪৪তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লরেঞ্জো ইনসগিনে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের চোখ ধাঁধানো শটে গোল করেন ইতালির এই ফরোয়ার্ড।
পরের মিনিটেই ইতালির রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে দেন বেলজিয়ামের ১৯ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড জেরেমি ডোকু। বল নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। জিওভান্নি দি লরেঞ্জো তাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় বেলজিয়াম। স্পট কিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান লুকাকু। ২০০৪ সালের পর সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার হিসেবে ইউরোতে পেনাল্টি জেতা ফুটবলার হলেন ডোকু।
২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ইতালি। দ্বিতীয়ার্ধে গোলশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে বেলজিয়াম। ৬১তম মিনিটে বড় বিপদ থেকে বাঁচে ইতালি। ৬৪তম মিনিটে পরিষ্কার একটি আক্রমণ সাজায় বেলজিয়াম। ডি-বক্সে ঢুকে লুকাকুর উদ্দেশ্যে বল বাড়ান ডি ব্রুইনে। আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়িয়ে দিচ্ছিলেন লকাকু। কিন্তু ইতালিয়ান মিড ফিল্ডার লিওনার্দো স্পিনজোলা এ যাত্রায় দলকে রক্ষা করেন।
৬৬ মিনিটে স্পিনজোলার শট সামান্যর জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়। ৭২তম মিনিটে ইতালির ডি-বক্সে বল পাওয়া লুকাকু হেড করতে পারলে গোলের দেখা মিলতে পারতো। কিন্তু বলে মাথা ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। ৮৪তম মিনিটে বেলজিয়ামের কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় ডোকুর শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। রেফারির ম্যাচ শেষের বাঁশিতে বেলজিয়ামের ইউরো মিশনও শেষ হয়।