অবসর নেওয়া মাশরাফিকে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলে চান আশরাফুল
বয়স চলে ৩৯, কিন্তু তাতে নজর দেওয়ার সময় কই মাশরাফি বিন মুর্তজার! পেসার হয়ে এই বয়সেও মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিজ্ঞ এই পেসার। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সিলেট স্ট্রাইকার্সের নেতৃত্বে থাকা মাশরাফি বল হাতে এখনও ভরসার নাম। ছয় ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি মাশরাফি। দীর্ঘদিনের বন্ধু ও জাতীয় দলের সতীর্থকে এমন ছন্দে দেখে মোহাম্মদ আশরাফুল মনে করেন, এখনও অনায়াসেই জাতীয় দলে জায়গা পেতে পারেন মাশরাফি।
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সফরে আসবে ইংল্যান্ড। এই সফরে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলবে ইংলিশরা। পারফরম্যান্স বিবেচনায় টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাশরাফিকে দলে নেওয়া যায় বলে মনে করেন আশরাফুল। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কেবল টি-টোয়েন্টি থেকেই অবসর নিয়েছেন মাশরাফি, সেটাও সেই ২০১৭ সালে।
অবসর না নিলেও মাশরাফি তার সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০০৯ সালে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন পাঁচ বছর আগে। প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডেতে খেলা হয় না ২০২০ সালের মার্চের পর। কেবল ঘরোয়া দুই টুর্নামেন্ট ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিপিএলে নিয়মিত মাশরাফি। যদিও তার পারফরম্যান্সে বোঝা উপায় নেই যে, বছরের বেশিরভাগ সময় খেলার বাইরে থাকেন তিনি। অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ মাশরাফি উইকেট পড়ে মাপা লাইন, লেংথ আর কাটারকে সম্বল বানিয়ে এখনও লড়ে যাচ্ছেন।
মাশরাফি ৫০ বছর বয়সেও পারফরম্যান্স করতে পারবেন বলে বিশ্বাস আশরাফুলের। রোববার মিরপুরের সিটি ক্লাব মাঠের এক অনুষ্ঠানে মাশরাফিকে নিয়ে তিনি বলেন, 'যারা আসলে মেধাবী, তাদের ক্ষেত্রে বয়সটা শুধু সংখ্যা। যেহেতু সে প্রকৃত প্রতিভা ছিল, সে ৫০ বছরে গিয়েও তার পারফরম্যান্সটা করতে পারবে, আমি বিশ্বাস করি।'
'এটা এক দিক থেকে ইতিবাচক, আরেকদিক থেকে মনে হয় আমরা উন্নতি করছি কি না। কারণ সে পাওয়ার প্লেতে ৩ ওভার বল করছে ১১০-পেসে, চমৎকার লাইন লেংথে বল করছে। কিন্তু আমাদের যারা টপ প্লেয়ার যেমন সৌম্য সরকার ওর বলে আউট হচ্ছেন, পাওয়ার হিট করতে পারছে না। ওই জায়গায় চিন্তা হচ্ছে, আসলে আামাদের খেলাটা কি উন্নতি হচ্ছে কী না।' যোগ করেন আশরাফুল।
কম গতি নিয়ে পাওয়ার প্লেতে বোলিং করেও সফলতা পাচ্ছেন মাশরাফি। ওভারপ্রতি ৬.৭৫ রান দিয়ে পাচ্ছেন উইকেটও। এ কারণেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাশরাফিকে দল নেওয়া উচিত বলে মনে করেন আশরাফুল, 'পারফরম্যান্সে তো আসলে জাতীয় দলে আসা উচিত মাশরাফির। কারণ আপনি যদি সব মিলিয়ে দেখেন যারা তরুণ পেসার আছে, তাদের থেকে ইকোনমি ও উইকেটে মাশরাপি উপরে। এখন সে খেলবে কিনা, এটা গুরুত্বপূর্ণ। মাশরাফি জাতীয় দলে খেলবে কিনা এটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে পারফরম্যান্সে অবশ্য টি-টোয়েন্টিতে যে ইংল্যান্ডের সাথে খেলা, সে সহজেই আসে।'
ফিক্সিং কাণ্ডে লম্বা সময়ের জন্য নিষিদ্ধ থাকা আশরাফুল মাঠে ফিরে প্রায়ই জাতীয় দলে ফেরার কথা বলতেন। কিন্তু সেই আশা আর দেখেন না এবার বিপিএলে দল না পাওয়া সাবেক এই তারকা ব্যাটসম্যান ,'এখন আর আশা (জাতীয় দলে ফেরা) করি না। আমি তো যথেষ্ট ক্রিকেট খেলেছি। কিন্তু যারা তরুণ তারা যে বসে আছে, আমি তাদেরকে নিয়ে চিন্তিত। আমি এখন শুধু খেলতে চাই। আর হয়তো একটা দুইটা মৌসুম খেলব, তারপর তো... যথেষ্ট ইনশা আল্লাহ।'
আশরাফুলের বয়স চলছে ৩৮, আরও দুই-একটি মৌসুম খেলাটাই বাস্তবসম্মত চিন্তা। এরপর ক্রিকেটকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় বলার পরিকল্পনা তার। মাঠ ছাড়লেও ক্রিকেটের সঙ্গেই থাকতে চান তিনি। বিসিবিতে কাজ করার প্রশ্নে সরাসরি কিছু না বললেও ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার, 'এখনও ওইভাবে চিন্তা করিনি (বিসিবিতে আসার প্রসঙ্গে)। তবে ক্রিকেটের সঙ্গে থাকতে চাই। যেহেতু আমার খেলার একটা অভিজ্ঞতা আছে, আমি সেই জিনিসগুলো শেয়ার করতে চাই।'