যে ট্রফি বদলে দিয়েছে মেসিকে
সময়টা ২০২১ সাল। গোটা বিশ্ব তখনও মেতে আছে মেসি-রোনালদোর মধ্যে কে সেরা, সেই তর্কে। তবে দুজনের মধ্যে কে সেরা, সেটির পার্থক্য গড়ে দেয় একটি মাত্র আন্তর্জাতিক শিরোপা। ২০১৬ ইউরো জিতে এই তর্কে মেসিকে যেন এক প্রকার পেছনেই ফেলে দেন রোনালদো। কারণ মেসির আন্তর্জাতিক ট্রফির সংখ্যা তখনও যে শূন্য।
রোনালদোর চেয়ে বেশি ব্যালন ডি অর জিতেও সেরাদের সেরা হওয়ার জন্য মেসির দরকার ছিল আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে অন্তত একটি শিরোপা জেতা। সেই শিরোপার সন্ধানে বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন এই আর্জেন্টাইন জাদুকর। তখন পর্যন্ত একটি বিশ্বকাপ ও তিনটি কোপা আমেরিকার ফাইনালে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয় মেসিকে। এরপরই আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ, ২০২১ সালের ১১ জুলাই। যে দিনটি বদলে দেয় মেসির জীবন।
মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকার ফাইনালে সেদিন ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে আর্জেন্টিনার শুধু ২৮ বছরের শিরোপা জেতার অপেক্ষাই শেষ হয়নি, মেসিও নিজেকে নিয়ে গেছেন রোনালদোর সমান্তরালে। সঙ্গে অনুপ্রেরণাও খুঁজে পেয়েছেন ২০২২ বিশ্বকাপ জেতার।
বার বার ব্যর্থ হওয়া লিওনেল মেসি নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের জন্য ২০২১ কোপা আমেরিকাতে যেন নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। এমনকি মেসিকে একটি শিরোপা উপহার দিতে গোটা দলই হয়ে উঠে মরিয়া।
চার গোল ও পাঁচ অ্যাসিস্ট করে নেতা মেসি দলকে নিয়ে যান ফাইনালে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এলএম টেন গোলের দেখা না পেলেও, বন্ধু আনহেল দি মারিয়ার ট্রেডমার্ক 'চিপ' গোলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করে আর্জেন্টিনা। সাথে সাথে আন্তর্জাতিক শিরোপা জয়ের অপেক্ষাও ফুরোয় এই মেসির।
সেই ট্রফিই বদলে দেয় পুরো আর্জেন্টিনা দলকে। ২৮ বছর পর কোপা জয় তাদের জন্য হয়ে ওঠে আরো বড় কিছু জয়ের অনুপ্রেরণা। যার ফলশ্রুতিতে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে এক ভিন্ন আর্জেন্টিনাকে দেখে গোটা ফুটবল বিশ্ব। খাদের কিনারা থেকে উঠে এসে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আলবিসেলেস্তেরা। মেসিও হোন টুর্নামেন্ট সেরা। নিজেকে নিয়ে যান সব তুলনার ঊর্ধ্বে। হয়ে ওঠেন দ্যা গ্রেটেস্ট অব অল টাইম, দ্যা আল্টিমেট গোট।