হঠাৎ বিপর্যয়ের পর মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পেল বাংলাদেশ
শুরুতে ধুঁকলেও উইকেটে মানিয়ে নেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও তানজিদ হাসান তামিম। দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরি করা এই দুই ব্যাটসম্যান যে রান যোগ করেন, তা বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা উদ্বোধনী জুটি। এমন শুরুর পর বড় সংগ্রহেই চোখ ছিল সাকিববিহীন বাংলাদেশের। কিন্তু ভারতীয় স্পিনারদের তোপে হঠাৎ দিক হারানো বাংলাদেশ সে পথে হাঁটতে পারলো না। ভারতের বিপক্ষে যে মাঝারি সংগ্রহ গড়লো বাংলাদেশ, সেটা সম্ভব হয়েছে শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের কল্যাণে।
বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে বৃহস্পতিবার পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ২৫৬ রান তুলেছে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে দলটির বিপক্ষে খেলা পাঁচ ম্যাচের মধ্যে এবারই আগে ব্যাটিং করলো তারা। বিশ্ব আসরে সব মিলিয়ে ভারতের বিপক্ষে এটা বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৯২ রান যোগ করেন লিটন ও তানজিদ তামিম। বিশ্বকাপে এটাই তাদের সেরা উদ্বোধনী জুটি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আগের সেরা উদ্বোধনী জুটি মেহরাব হোসেন অপি ও শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুতের, ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৯ রান যোগ করেন তারা।
সর্বশেষ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া তানজিদ তামিম ওয়ানডেতে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। ৪১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা বাংলাদেশের তরুণ এই বাঁহাতি ওপেনার ৪৩ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫১ রান করে আউট হন। এখান থেকেই বাংলাদেশের বিপর্যয়ের শুরু।
দুই ভারতীয় স্পিনার কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজার সঙ্গে তোপ দাগেন পেসার মোহাম্মদ সিরাজও। একে একে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত, মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন কুমার দাস। বিনা উইকেট ৯২ থেকে ১৩৭ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এর মধ্যে কেবল লিটন রানের দেখা পেয়েছেন, ডানহাতি এই ওপেনার ৮২ বলে ৭টি চারে ৬৬ রান করেন। বিশ্বকাপে এটা তার তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি।
তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে চাপ কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেও পারেননি মুশফিকুর রহিম। হৃদয় ১৬ রান করে বিদায় নেন। মুশফিক পাড়ি দেন আরেকটু পথ। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান ৪৬ বলে একটি করে চারও ছক্কায় ৩৮ রান করে আউট হন। এই ইনিংস খেলার পথে সাকিবের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে ১ হাজার রান পূর্ণ করেন তিনি, ছাড়িয়ে গেছেন সৌরভ গাঙ্গুলী, ভিভ রিচার্ডস, মার্ক ওয়াহদের মতো কিংবদন্তিদের।
মুশফিকের বিদায়ের পর বাংলাদেশ যে এগিয়েছে, সেটা মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। চোটের কারণে এই ম্যাচ থেকে ছিটকে যাওয়া সাকিবের জায়গায় খেলা নাসুম আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়েন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। জাসপ্রিত বুমরাহর বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৩৬ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৪৬ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। নাসুম করেন ১৪ রান, শেষ বলে ছক্কা মারাসহ ৩ বলে ৭ রান করেন শরিফুল ইসলাম। বুমরাহ, সিরাজ ও জাদেজা ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান শার্দুল ও কুলদীপ।