দুর্দান্ত বোলিংয়ে শরিফুলের হ্যাটট্রিক, নাম বসালেন রাসেল-সামিদের পাশে
তিন বল হওয়ার পর মনে হচ্ছিল, আগের তিন ওভারই বরং ভালো ছিল। উইকেট না পেলেও ৫ ইকোনমিতে শরিফুল ইসলাম খরচা করেন মাত্র ১৫ রান। নিজের ও ইনিংসের শেষ ওভার করতে যাওয়া দুর্দান্ত ঢাকার বাঁহাতি এই পেসারকে প্রথম তিন বলের দুটিতেই ছক্কা হজম করতে হয়। কিন্তু পরের বল থেকে অন্য গল্প। উইকেট বৃষ্টি ঝরালেন তরুণ এই পেসার, টানা তিন বলে উইকেট নিয়ে গড়ে ফেললেন হ্যাটট্রিকের কীর্তি।
১৯ জানুয়ারি মাঠে গড়ানো বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) শুরুর দিনেই হ্যাটট্রিক করেছেন শরিফুল। উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন তিনি। বিপিএলের ইতিহাসে সপ্তম ও বাংলাদেশের চতুর্থ বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের স্বাদ নিলেন জাতীয় দলের পেস আক্রমণের অন্যতম ভরসা হয়ে ওঠা শরিফুল। এটা তার ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক।
তার আগে বিপিএলে হ্যাটট্রিক করেছেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ সামি, আল-আমিন হোসেন, আলিস আল ইসলাম, পাকিস্তানের আরেক পেসার ওয়াহাব রিয়াজ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের তারকা অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল ও যুব দলে শরিফুলেরই সতীর্থ মৃতুঞ্জয় চৌধুরী। কুমিল্লার খুশদিল শাহ, রস্টন চেস ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে ফিরিয়ে এলিট এই তালিকায় নামটি তুলে নিলেন শরিফুল।
বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন মোহাম্মদ সামি। সাবেক এই পেসার ২০১২ বিপিএলে দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেন। তিন বলে তার শিকার ছিল ড্যারেন স্টিভেনস, আফতাব আহমেদ ও রানা নাভেদুল হাসা। ২০১৫ সালে প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে বিপিএলে হ্যাটট্রিকের স্বাদ নেন ডানহাতি পেসার আল-আমিন। বরিশাল বুলসের হয়ে সিলেট সুপার স্টার্সের মুমিনুল হক, রবি বোপারা ও নুরুল হাসান সোহানকে ফেরান তিনি।
বিপিএল অভিষেকেই বাজিমাত করেন আলিস আল ইসলাম। ২০১৯- এর আসরে ঢাকা ডায়নামাইটসের নেট বোলার থেকে ম্যাচে সুযোগ পেয়ে যাওয়া ডানহাতি এই অফ স্পিনার তিন বলে ফেরান রংপুর রাইডার্সের মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও ফরহাদ রেজাকে। বিপিএলের অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করা প্রথম বোলার তিনি।
২০১৯ বিপিএলে হ্যাটট্রিক করেন ওয়াহাবও। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে খেলা ডানহাতি এই পেসার খুলনা টাইটান্সের ডেভিড ভিসা, তাইজুল ইসলাম ও সাদ্দাম হোসেনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের কীর্তি গড়েন। এই আসরে হ্যাটট্রিকের স্বাদ পান রাসেলও। ঢাকা ডায়নামাইটসের এই অলরাউন্ডার টানা তিন বলে চিটাগং ভাইকিংসের মুশফিকুর রহিম, ক্যামেরন ডেলপোর্ট ও দাসুন শানাকাকে আউট করেন।
আলিসের মতো মৃত্যুঞ্জয়ও বিপিএল অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেন। বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে অভিষেকে হ্যাটট্রিক করেন বাঁহাতি এই পেসার। ২০২২ বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে একে একে তিনি সাজঘরে ফেরান সিলেট সানরাইজার্সের এনামুল হক বিজয়, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও রবি বোপারাকে।