ক্যাটারিংয়ে ২০০ রুপি আয় করা দিনের গল্প শোনালেন সিরাজ
পরিশ্রম কখনও বিফলে যায় না, এমনই বিশ্বাস ভারতের পেসার মোহাম্মদ সিরাজের। এক সময় বন্ধুদের সঙ্গে ক্যাটারিংয়ের কাজ করে ১০০-২০০ রুপি আয় করা তারকা এই পেসার এখন শুধু বিসিসিআইয়ের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকেই বছরে ৫ কোটি রুপি পান। ম্যাচ ফি বাবদ লাখ লাখ টাকা ছাড়াও সিরাজ আইপিএল চুক্তি থেকে বছরে আয় করেন ৭ কোটির মতো।
১৯৯৪ সালের ১৩ মার্চ হায়দরাবাদে জন্ম নেওয়া সিরাজ আজ ৩০ বছরে পা দিলেন। এদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিসিসিআইয়ের পোস্ট করা এক ভিডিওতে নিজের জীবনের অজানা অধ্যায় নিয়ে কথা বলেন। ছেলেবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে যে ঈদগাহ মাঠে বেশিরভাগ সময় কাটতো, বিলাসবহুল গাড়ি চালিয়ে স্মৃতিবিজরিত সেই স্থানে যান সিরাজ। সেখানে হাজির ছিলেন তার ছেলেবেলার বন্ধুরাও।
চিরচেনা জায়গায় ফিরে আড্ডার ফাঁকে সিরাজ বলেন, 'হায়দরাবাদে ফেরা মানেই আমার প্রথম ভাবনা থাকে যে, ঘরে যাব। তারপর ঈদগাহ যাব। বিশ্বের যেখানেই যাই না কেন, এই জায়গার মতো শান্তি খুঁজে পাই না কোথাও। এখানেই আমার বেড়ে ওঠা। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা, চা খাওয়া, আড্ডা দেওয়া; সব কিছু এখানেই।'
'২০১৯-২০ সালেই ভেবেছিলাম যে, আরও একটা বছর দেখব। তারপর খেলা ছেড়ে অন্য কিছু করার কথা ভাবব। আমরা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। একমাত্র বাবাই উপার্জন করতেন। বাড়িতে ছিল বলতে একটি অটোরিক্সা ও একটি প্ল্যাটিনা (বাইক), সেটাও ধাক্কা দিয়ে স্টার্ট করতে হতো। ১৭-১৮ বছর বয়সেও আমি ক্যাটারিংয়ে কাজ করেছি। ক্রিকেট খেলা ভালোবাসতাম। বাড়ির লোক পড়াশোনা করতে বলতো, তবে আমি কাজ করে বাড়িতে কিছু সাহায্য করার চেষ্টা করতাম।' যোগ করেন তিনি।
নিজের জীবনের সংগ্রামের গল্প শোনাতে গিয়ে ডানহাতি এই পেসার বলেন, 'ক্যাটারিংয়ের কাজ বিশেষ জানতাম না। রুমালি রুটি ওল্টানোর সময় হাত পুড়ে যেতো। তবু ১০০-২০০ টাকা রোজগার হয়ে যেতো। ১৫০ টাকা বাড়িতে দিতাম, নিজের খরচের জন্য ৫০ টাকা থাকতো। বিষয়টা অত্যন্ত স্পর্শকাতর, তবে কষ্ট না করলে সাফল্য মেলে না।'
যে ঈদগাহ ময়দানে টেনিস বলে ক্রিকেট খেলে বড় হয়েছেন সিরাজ, সেখানকার বন্ধুদের কাছ থেকেই জানা যায়, সিরাজ এক সময় ব্যাটিং করতে পছন্দ করতেন। লম্বা লম্বা ছক্কা মারতেন। ঈদগাহ মাঠের সেই ব্যাটসম্যান সিরাজ এখন তারকা পেস বোলার, যার আগুনে বোলিংয়ে দিশেহারা হয়ে পড়তে দেখা যায় বিশ্বের নামিদামি ব্যাটসম্যানদেরও।