জিততে টেস্টের ইতিহাস পাল্টাতে হবে বাংলাদেশকে
শ্রীলঙ্কার প্রথম ইনিংসই মূলত চট্টগ্রাম টেস্টের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। লঙ্কানদের ইনিংস গড়ায় অবশ্য বাংলাদেশেরও অবদান আছে। বাংলাদেশ মোট সাতটি ক্যাচ ছাড়ে, সুযোগ কাজে লাগিয়ে ছয় হাফ সেঞ্চুরিতে ৫৩১ রান তোলে সফরকারীরা। জবাবে হতশ্রী ব্যাটিংয়ে ১৭৮ রানেই ইনিংস শেষ বাংলাদেশের, প্রথম ইনিংসেই ৩৫৩ রানে এগিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
ফলো অন করিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশেকে ব্যাটিংয়ে পাঠাতে পারতো ধনঞ্জয়া ডি সিলভার দল। কিন্তু সেটা না করে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। এই ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ভালো সময় না গেলেও বিশাল লিড নিয়েছে তারা। ৭ উইকেটে ১৫৭ রান তুলে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কা, লঙ্কানদের লিড দাঁড়িয়েছে ৫১০ রান।
জিততে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশকে করতে হবে ৫১১ রান। সিলেট টেস্টেও বাংলাদেশের এটাই লক্ষ্য ছিল, ৩২৮ রানে হেরেছিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল। টেস্টে বাংলাদেশের সফল রান তাড়াই মোটে ২১২ রান, সেখানে এই তাদের কাছে পাহাড়সমই। বিশাল লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে ৮ ওভারে বিনা উইকেটে ৩১ তুলেছে বাংলাদেশ। মাহমুদুল হাসান জয় ১৯ ও জাকির হাসান ১১ রানে অপরাজিত আছেন।
ব্যাটিং ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে যাওয়া বাংলাদেশ দিশা খুঁজে পাচ্ছে না। টানা পাঁচ ইনিংসে ২০০ রানের নিচে অলআউট হয়েছে তারা। ঘরের মাঠে সর্বশেষ ২০০৪ সালে এই অভিজ্ঞতা হয় বাংলাদেশের। সিলেট টেস্টের দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১৮৮ ও ১৮২ রান করে তারা। এমন দুঃসময়ে থাকা দলের জন্য ২০০ পেরোনো লক্ষ্যই অনেক বেশি, সেখানে ৫০০ বা তার বেশি রান পাড়ি দেওয়া কল্পনার মতোই।
এ ছাড়া টেস্টের ইতিহাসেই এতো রান তাড়ার রেকর্ড নেই। সর্বোচ্চ রান তাড়া ৪১৮ রানের, ২০০৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টের প্রায় দেড়শ বছরের ইতিহাসে ৪০০' বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড মাত্র চারটি। ৪০০'র বেশি রান তাড়ার প্রথম রেকর্ড গড়ে অস্ট্রেলিয়া, ১৯৪৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ১৯৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪০৩ রান তাড়া করে জেতে ভারত। বাকি জয়টি দক্ষিণ আফ্রিকার, ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪১৪ রান টপকে জেতে প্রোটিয়ারা।
প্রথম ইনিংসে রান পাহাড় গড়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় ইনিংসে যে পুরোই অচেনা হয়ে ওঠে। হাসান মাহমুদ ও খালেদ আহমেদের বোলিং তোপে শুরুতেই দিক হারানো দলটি ৮৯ রানেই ৬ উইকেট হারায়। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের কল্যাণে ৬ উইকেটে ১০২ রান তুলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে লঙ্কানরা। চুতর্থ দিন আরেক উইকেট হারিয়ে ৫৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে তারা।
শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে উল্লেখ করার মতো রান করেছেন কেবল দুজন। তৃতীয় দিন ভাঙনের সুরের মাঝেই ৩৪ রান করেন নিসান মাদুসকা। আজ ৫৬ রান করে আউট হন ম্যাথুস। প্রবাথ জয়জুরিয়া ২৮ ও বিশ্ব ফার্নান্দো ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট খেলতে নামা হাসান ৪টি ও খালেদ ২টি উইকেট নেন। একটি উইকেট পান লম্বা সময় পর টেস্টে ফেরা সাকিব আল হাসান।