শান্তর বক্তব্যে হতাশ পাপন বললেন, ‘এটা গ্রহণযোগ্য নয়’
সুপার এইট পর্বে টানা দুই ম্যাচ হেরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার হারে আসে সুযোগ, সম্ভাবনা জাগে সেমি-ফাইনাল খেলার। শেষ চারের টিকেট পেতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২.১ ওভারে ১১৬ রান তুলতে হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু সেই চেষ্টাই করেনি তারা, স্বাভাবিকভাবে ম্যাচ জিততে গিয়ে উল্টো হেরে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
সেমি-ফাইনালে ওঠার চেষ্টা না করে এভাবে ম্যাচ হারা বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে চরম সমালোচনা শুরু হয়। কী ছিল পরিকল্পনা? ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত জানান, প্রথম তিন উইকেট নিয়ে চড়াও হওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। সেটায় সফল না এলে শুধু ম্যাচ জিততে চাইবেন তারা। অধিনায়কের এমন বক্তব্য স্বাভাবিকভাবে নেননি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। মঙ্গলবার বোর্ড সভা শেষে তিনি জানান, অধিনায়কের এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। তার মতে বাংলাদেশ ১২.১ ওভারেই জিততে চেয়েছে, সেই চেষ্টা ক্রিকেটারদের মধ্যে দেখেছেন তিনি।
শান্তর এমন বক্তব্যে যারপরনাই হতাশ বিসিবি সভাপতি। তার ভাষায়, 'আমি একটা ব্যাপারে উত্তর দিতে পারছি না, সেটা হলো আমাদের অধিনায়ক বলেছে যে ৩ উইকেট পড়ার পর আমরা চেষ্টা করিনি। এটা কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু আমি যতক্ষণ খেলা দেখেছি ততোক্ষণ এমনটা মনে হয় নাই। যতোক্ষণ পর্যন্ত তাওহিদ হৃদয় ছিল, ততোক্ষণ ওরা চেষ্টা করেছে। মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদও রশিদ খানকে ছয় মারতে গিয়ে আউট হয়েছে।'
শান্তর বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় জানিয়ে পাপন আরও বলেন, 'আমি প্রথম থেকেই বলছি, ওর (শান্তর) এই কথার সঙ্গে আমরা একমত নই। এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। ১২ ওভার পর্যন্ত আমাদের লড়াই করা উচিত ছিল। দেখলাম যে যখন রক্ষণাত্মক খেলার দরকার ছিল, তখন মেরে খেলেছে। আর যখন মেরে খেলার দরকার ছিল, তখন রক্ষণাত্মক খেলেছে।'
১২.১ ওভারে ১১৬ রান করা টি-টোয়েন্টিতে কঠিন কিছু নয় বলে মনে করেন পাপন। তবে সেন্ট ভিনসেন্টের উইকেটের ব্যাপারটিও বিবেচনা করতে বলছেন তিনি। অন্য দলের উদাহরণ টেনে বিসিবি সভাপতি বলেন, '১২.১ ওভারে ১১৬ রান টি-টোয়েন্টিতে করা কোনো ব্যাপারই না। এটা আমি মেনে নিচ্ছি। কিন্তু ওই উইকেটে কেউ কি ওই রান করতে পেরেছে। অস্ট্রেলিয়াও তো আফগানিস্তানের কাছে হেরেছে ওই উইকেটে। ওই কন্ডিশনটা সহজ ছিল না, কিন্তু ওরা (বাংলাদেশ ব্যাটাররা) চেষ্টা করেছে।'
শান্তর এমন বক্তব্য টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনারই বহিঃপ্রকাশ। অধিনায়ক হিসেবে তিনি একাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা হওয়ার কথা নয়। টিম ম্যানেজমেন্টের কৌশল কী ছিল? পাপন বলেন, 'আপনাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর নির্দিষ্ট করে দিতে পারতাম, যদি আমরা ওদের সঙ্গে আমি কথা বলতে পারতাম। আমি না, মানে বোর্ডে যারা আছে ওরা কথা বলতে পারতো। কারণ আজ বোর্ডে যাদেরকে জিজ্ঞাস করেছি, তারা কেউ জানে না।'
'এখন আমি যদি আপনাকে জিজ্ঞাস করি একটা ব্যাপারে, আপনি যদি বলেন আপনি জানেন না, তাহলে আমরা কী করবো? বেসিক কিছু জিনিস, একটা হচ্ছে কোচের রিপোর্ট থাকে। সেটা চাওয়া হয়েছে, যেকোনো সময় পেয়ে যাব। আরেকটা হল টিম ম্যানেজারের রিপোর্ট থাকে। সেটাও আমরা পাইনি। এই দুটি পাওয়ার পরে আমরা কোচিং স্টাফ, অধিনায়কের সঙ্গে বসি। কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গেও বসি। তো এখন পর্যন্ত এগুলোর একটাও হয়নি। এখন দর্শক হিসেবে আমার যেটা মনে হয়েছে, তা বললাম।' যোগ করেন তিনি।