বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলতে চান কৃষ্ণা-সাবিনারা
আগের সাফ জিতেই স্বপ্নের সীমানা বাড়িয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের নারী ফুটবলাররা। একই আঙিনায় এবারও বিজায় নিশান উড়িয়েছেন তারা। দেশে ফিরে ছাদখোলা বাসে বাফুফেতে গিয়ে সংবর্ধনার পাশাপাশি ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক কোটি টাকা পুরস্কার পান সাবিনা-তহুরারা। আজ তাদেরকে সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে নানা সমস্যার পাশাপাশি নিজেদের ইচ্ছার কথাও প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন নারী ফুটবলাররা।
এর মধ্যে একটি বিখ্যাত ক্লাব বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলতে চাওয়ার আবদার। নারী দলের এশিয়ার বাইরে ম্যাচ খেলার ইচ্ছা অনেক দিনের। সুযোগ পেয়ে এই আকাঙ্ক্ষার কথা আজ প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছেন দক্ষিণ এশিয়ার সেরা প্রতিযোগিতায় টানা দুবার দেশকে শিরোপা জেতানো নারী ফুটবলাররা।
বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টাকে জানান বাংলাদেশ দলের ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার। অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, এশিয়া বাইরে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ যেন তাদের করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে মেয়েদের সর্বশেষ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাজয়ী বার্সেলোনার বিপক্ষে খেলার আবদার রাখেন কৃষ্ণা।
শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় নারী ফুটবলারদের সংবর্ধনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বে সকাল সাড়ে ১০টায় যমুনায় প্রবেশ করে নারী ফুটবল দল। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সকালের নাস্তায় নিজেদের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন ফুটবলাররা। প্রাথমিকভাবে শুনে সমস্যাগুলো লিখিতভাবে জমা দিতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা, আশ্বাস দিয়েছেন সমস্যা সমাধানেরও।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়েছে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অভিনন্দন জানিয়ে ফুটবলারদের উদ্দেশ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, 'এই সাফল্যের জন্য আমি গোটা জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাই। জাতি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশের মানুষ সাফল্য চায়। আপনারা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছেন।'
ফুটবলারদের সমস্যার কথা মনোযোগের সঙ্গে শুনেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এসব সমস্যা লিখিতভাবে জমা দিতে জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, 'যা মন চায়, আপনারা লিখতে পারেন, কোনো দ্বিধা করবেন না। যদি এখন কিছু বলতে চান, সেটাও বলতে পারেন। আমরা আপনাদের দাবি পূরণ করার চেষ্টা করব। এখন যদি কিছু সমাধান করা যায়, তবে আমরা এখনই তা করব।'
এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি নারী ফুটবলারদের সংগ্রামের বিষয়টি তুলে ধরেন অধিনায়ক সাবিনা। তিনি বলেন, 'অনেক বাধা অতিক্রম করে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। এটা শুধু নারী ফুটবল দল নয়, বাংলাদেশের নারীরা অনেক সংগ্রামের মুখোমুখি হয়। আমরা যা বেতন পাই, তা দিয়ে পরিবারকে পর্যাপ্ত সহায়তা করতে পারি না। কারণ, আমরা বেশি কিছু পাই না।'
একেকজন ফুটবলার একেক সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এই পর্যায়ে আসতে কতোটা বাধা-বিপত্তি পেরোতে হয়েছে, কয়েকজন সতীর্থের সংগ্রামের গল্প জানানোর মাধ্যমে তা তুলে ধরেন সাবিনা। ঢাকায় আবাসন সমস্যা কথা প্রধান উপদেষ্টাকে জানান কৃষ্ণা। খাগড়াছড়ির প্রত্যন্ত উপজেলা লক্ষ্মীছড়ি থেকে উঠে আসতে কতোটা লড়তে হয়েছে, তা বর্ণনা করেন মনিকা চাকমা। কঠিনতম পথ পেরিয়ে নিজের উঠে আসার গল্প শোনান দিনাজপুর জেলার রানীশংকৈল গ্রামের মেয়ে স্বপ্না রানী।