সাফজয়ী দলের জন্য বাফুফের পুরস্কার ঘোষণার অপেক্ষা
টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে দেশে ফিরে ছাদখোলা বাসে অভ্যর্থনা পায় বাংলাদেশ। সেদিন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) সাবিনা-ঋতুপর্ণাদের স্বাগত জানান ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইঁয়া। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষে থেকে পুরস্কার হিসেবে নারী দলকে একটি কোটি টাকার চেক বুঝিয়ে দেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) নারী দলের জন্য ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
ফুটবলারদের অভিভাবক সংস্থা বাফুফে এখনও কোনো পুরস্কার ঘোষণা করেনি। শিরোপা জিতে দেশে ফেরার কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও নারী দল যে বাফুফের কাছ থেকে পুরস্কার পাবে না, তেমন নয়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন গত ২৬ অক্টোবর বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া তাবিথ আউয়াল। আগামী শনিবার নতুন কমিটির প্রথম নির্বাহী সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
কেবল অর্থ পুরস্কারই নয়, সাফজয়ী দলকে সংবর্ধনাও দেওয়া হবে। অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও বাংলাদেশের মেয়েদের সাফল্য উদযাপন করতে চায় সংবর্ধনা দেওয়ার মাধ্যমে। নারী দলকে পুরস্কৃত করার প্রসঙ্গে বাফুফের নতুন সভাপতি বলেন, '৯ নভেম্বর আমাদের প্রথম সভায় নির্বাহী কমিটিতে পাস করে মেয়েদের পুরস্কারের ব্যাপারে একটা ঘোষণা দেব।' ২০২২ সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মেয়েদের নিম্নমানের সংবর্ধনা দেওয়া হয়, বিষয়টি মনে করালে তাবিথ বলেন, 'এটা প্রশ্ন নয়, পরামর্শ হিসেবে নিলাম। বিষয়টা নিয়ে আমরা সচেতন থাকব।'
১০ দিন হয়ে গেছে বাফুফে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন তাবিথ। কিন্তু আজ তিনি প্রথমবারের মতো গেলেন বাফুফে ভবনে। বাফুফে প্রধান নির্বাচিত হয়েই এএফসির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়া গিয়েছিলেন তিনি। দেশে ফেরার পর আজ বাফুফেতে গিয়ে ঘরে ফেরার মতো অনুভূতি হওয়ার কথা জানান দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার সাবেক এই সহ-সভাপতি। এদিন বাফুফের সর্বোচ্চ পর্যায়ের স্টাফ থেকে পরিচ্ছন্নকর্মীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তাবিথ।
বিকেল চারটার পরে বাফুফে বভনে যান তিনি। নতুন সভাপতিকে বরণ করে নেওয়ার মতো বিশেষ কার্যক্রম ছিল না সেখানে। বাফুফে ভবনে গিয়ে বেতনভুক্ত ক র্মীদের সঙ্গে পরিচয় পর্ব সারার পর নির্বাহী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে পরিচিত হন তাবিথ। ২০ জনের মধ্যে সহ-সভাপতিসহ ১৮ জন উপস্থিত ছিলেন। নতুন সভাপতি ও নির্বাহী সদস্যদের রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বাফুফের কর্মীরা। পরিচয়পর্ব শেষ ১২জন নির্বাহী সদস্যকে নিয়ে সাফজয়ী দলের সঙ্গে বসেন তাবিথ।
সভাপতি হিসেবে বাফুফেতে প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে তাবিথ বলেন, 'আজ আমরা সব স্টাফের সঙ্গে বসেছি (দেশের বাইরে থাকায় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন না), সর্বোচ্চ স্টাফ থেকে পরিচ্ছন্নকর্মী পর্যন্ত সবার সঙ্গে পরিচিতি সভা করেছি। পরপরই মেয়েদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। আগামী দিনের কিছু পরিকল্পনার কথা বলেছি। একটা নতুন কমিটি, এটা ফেস্টিভের জায়গা, এতো সিরিয়াস হওয়ার কিছু নেই। খেলার মনমানসিকতা নিয়ে আমরা আগামী চার বছর পালন করতে চাই। সেই বার্তা দিতেই এসেছিলাম আমরা।'
বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে স্বপ্নের মধ্যে আছেন জানিয়ে তাবিথ বলেন, 'নতুন সভাপতি হওয়ার রোমাঞ্চটা এখনেও আমার মাথায় খেলছে না। এখনো স্বপ্নের ভেতর আছি নাকি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়ে গেছে, সেটা বুঝতে পারছি না। একদিন না একদিন সভাপতি হব—স্বপ্ন ছিল। কিন্তু কবে কোন তারিখে বা কোন দিনে ঘুমের ভেতরে চিন্তা করেছি যে সভাপতি হব নির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না। ২০১২ সালে প্রথমবার বাফুফের সহসভাপতি হয়ে চিন্তা ছিল একদিন সভাপতি পদে লড়ব। কিন্তু তা এত শিগগির বাস্তবায়ন হবে ভাবিনি। অবশ্যই গর্বিত।'