ভারতকে উড়িয়ে টানা দ্বিতীয়বার যুব এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
আফগান জুজু জয় করে টুর্নামেন্ট শুরু, দ্বিতীয় ম্যাচে নেপাল পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশের কাছে। তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারার আগেই সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশ যুবাদের। যেখানে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালের টিকেট কাটে বাংলাদেশ। শিরোপার লড়াইয়েও চললো তাদের দাপট, আজিজুল হাকিম-শিহাব জেমসের সামনে লড়াই করতে পারলো না শক্তিশালী ভারতও। টানা দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতলো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল।
রোববার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতকে ৬৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। টানা দ্বিতীয়বারের মতো আসরটির শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ। এবার আজিজুল হাকিম তামিমের নেতৃত্বে শিরোপা জেতা দলটি গত আসরে চ্যাম্পিয়নের মুকুট জেতে মাহফুজুর রহমান রাব্বির অধিনায়কত্বে, ফাইনালে তারা হারায় সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। যুব এশিয়া কাপে বাংলাদেশের শিরোপা এই দুটিই। আসরটির ইতিহাসের সফলতম দল ভারত, সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশ এদিন প্রত্যাশিত ব্যাটিং করতে পারেনি, তাই আসেন বড় সংগ্রহও। মোহাম্মদ শিহাব জেমস, রিজান হোসেন, ফরিদ হাসানদের ব্যাটে ৪৯.১ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান তোলে। সংগ্রহ বড় না হওয়ায় বল হাতে দারুণ করতে হতো বাংলাদেশকে, সেই কাজটি ভালোভাবেই করে যুবারা। ইকবাল হোসেন ইমন, অধিনায়ক তামিম আল ফাহাদদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩৫.২ ওভারে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ভারতের ইনিংস ইনিংস। দলটির কোনো ব্যাটসম্যানই তিরিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলতে পারেননি, পাঁচজন করেন দুই অঙ্কের রান।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই চাপে পড়তে হয় ভারতকে। দলীয় ৪ রানেই ওপেনার আয়ুশ মাহাত্রেকে ফিরিয়ে দেন আল ফাহাদা। তাদের চাপ আরও বাড়ে বৈভব সূর্যবংশীর বিদায়ের। ১৩ বছর বয়সেই আইপিএলে দল পাওয়া ভারতের এই বিস্ময় বালককে ফেরান মারুফ মৃধা। ৫০ পেরোনোর আগে আরও একটি উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে যায় ভারত। ৭০ পেরোনোর পর তাদের ইনিংস এলোমেলো করে দেন বাংলাদেশের বোলাররা। ২০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট তুলে নেয় তারা, ৭ উইকেটে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯২ রান। তখনই জয়ের সুবাশ পাচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এক পাশ আগলে আশা জিইয়ে রাখেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান।
হার্দিক রাজের সঙ্গে ২৩ রানের জুটি গড়েন তিনি। ১১৫ রানে এই জুটি ভেঙে দলের জয়ের পথ সুগম করেন তামিম। কিছক্ষণ পর হার্দিককেও ফেরালে জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন আমান। এ ছাড়া আন্দ্রে সিদ্ধার্ত ২০, কেপি কার্তিকেয়া ২১, হার্দিক রাজ ২১ ও চেতন শর্মা ১০ রান করেন। দুর্দান্ত বোলিং করা তামিম ২.২ ওভারে ৮ রানে নেন ৩ উইকেট। ইমনের শিকারও ৩ উইকেট, ৭ ওভারে ২৪ রান দেন তিনি। এ ছাড়া আল ফাহাদ ২টি এবং মারুফ ও রিজান একটি করে উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন রিজান। ৬৫ বলে ৩টি চারে ৪৭ রান করেন তিনি। ৬৭ বলে ৩টি চার ও একটি চক্কায় ৪০ রান আসে শিহাব জেমসের ব্যাট থেকে। ৪৯তম ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করা ফরিদ ৪৯ বলে ৩টি চারে ৩৯ রান করেন। এ ছাড়া জাওয়াদ আবরার ২০, তামিম ১৬ ও মারফ ১১ রান করেন। বাকি ছয়জনের কেউ-ই দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। ভারতের যুদ্ধজিত গুহা, চেতম শর্মা ও হার্দিক রাজ ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান কিরণ, কার্তিকেয়া ও মাহাত্রে।