কোহলিকে আউট করার উপায় জানেন বাস চালকও
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/04/kohli.jpg)
দীর্ঘদিন ধরে চলা দুঃসময়কে পেছনে ফেলে স্বরূপে ফিরেছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু চেনা ছন্দে বেশি সময় থাকা হয়নি ভারতের তারকা এই ব্যাটসম্যানের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে গত বছর এই ফরম্যাটকে বিদায় জানানো কোহলি টেস্ট এবং ওয়ানডেতে নিয়মিত। তবে আগের মতো করে ব্যাট হাতে শাসন করতে দেখা যায় না তাকে। বিশেষ করে টেস্টে খারাপ সময় লেগেই আছে। গত বছর ১০ টেস্টের ১৯ ইনিংসে ব্যাটিং করে একটি সেঞ্চুরি করেন তিনি, হাফ সেঞ্চুরিও একটি।
রান করতে পারছেন না বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান, যার মূলে তার আউট হওয়ার ধরন। অনেক আগে থেকেই অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিগুলোতে ভুগে আসছেন কোহলি। আরও নির্দিষ্ট করে বললে চতুর্থ, পঞ্চম কিংবা ষষ্ঠ উইকেটের ডেলিভারিতে পেছনে ক্যাচ দিয়ে প্রায়ই আউট হতে দেখা যায় তাকে। প্রতিপক্ষদের এটা ভালো করেই জানা, প্রতিপক্ষ বোলাররা এটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান। কোহলিকে যে এভাবে আউট করা সম্ভব, সেটা জানা আছে একজন বাস চালকেরও।
ক্রিকেটের খবর রাখেন বা খেলা দেখেন, এমন কারও কাছে কোহলির এই দুর্বলতা অজানা নয়। সেই তালিকারই একজন এই বাস চালক, যার কাঝ থেকে পরামর্শ পাওয়ার পর রঞ্জি ট্রফিতে অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিতে কোহলিকে আউট করেছেন রেলওয়ে দলের পেসার হিমাংশু সাংওয়ান। ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা একজন ব্যাটসম্যানকে আউট করে উল্লাসে ফেটে পড়া ডানহাতি এই পেসার নিজেই জানিয়েছেন এটা।
১২ বছর পর রঞ্জি ট্রফি খেলতে নেমেছিলেন কোহলি। প্রত্যাবর্তন পর্বটা অবশ্য মনে রাখার মতো হয়নি দিল্লির এই ব্যাটসম্যানের। হিমাংশুর বলে বোল্ড হওয়ার হওয়ার আগে ৬ রান করেন তিনি। রেলওয়ে পেসারের করা ডেলিভারিটি বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকে, কোহলির ব্যাট ও পায়ের মাঝ দিয়ে গিয়ে ভেঙে দেয় স্টাম্প। দিল্লি ইনিংস ব্যবধানে জেতায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করা হয়নি তার। কিন্তু দল হারার পরও শিরোনামে পরিণত হয়েছেন হিমাংশু। কারণ একটাই, কিং কোহলিকে 'ক্লিন বোল্ড' করেছেন তিনি।
সবখানে আলোচনায় থাকা হিমাংশু জানিয়েছেন, দুর্দান্ত ওই ডেলিভারির আগের আলোচনা নিয়ে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি বলেছেন, 'ম্যাচের আগে এমন আলোচনা ছিল যে, দিল্লির হয়ে বিরাট কোহলি ও ঋষভ পন্ত খেলবে। তখনও আমরা জানতাম না ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। পরে ধারণা পাইপন্ত না খেললেও কোহলি খেলবে এবং ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। রেলওয়ে দলের পেস আক্রমণের নেতৃত্বে আমি। দলের সবাই মনে করেছে, আমি কোহলির উইকেট নিতে পারি।'
'এমনকি যে বাসে আমরা যাচ্ছিলাম, সেই বাসের চালকও আমাকে বলেন, 'তুমি জানো কোহলিকে তোমার চতুর্থ-পঞ্চম স্টাম্পে বোলিং করতে হবে, তাহলেই সে আউট হয়ে যাবে। আমার আত্মবিশ্বাস ছিল। অন্যের দুর্বলতা নিয়ে না ভেবে আমি শুধু আমার শক্তির জায়গায় ফোকাস করতে চেয়েছি। আমি আমার শক্তি অনুযায়ী বোলিং করেছি এবং উইকেট পেয়েছি।' যোগ করেন হিমাংশু। ওই ম্যাচে দিল্লির প্রথম ইনিংসে ২৫.৪ ওভারে ৫৫ রানে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট পান হিমাংশু।
স্টাম্প উপড়ে বুনো উল্লাসে মাতলেও কোহলিকে নিয়ে আলাদা কোনো পরিকল্পনা ছিল না বলেন জানান ২৯ বছর বয়সী হিমাংশু। তিনি বলেন, 'কোহলির জন্য নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কোচরা আমাদের বলেছিল, দিল্লির ক্রিকেটাররা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করে, তারা সবাই স্ট্রোক খেলোয়াড়। আমাদেরকে ঠিক লাইনে বোলিং করতে বলা হয়েছিল।'
'আমাদের ইনিংস শেষে ড্রেসিং রুমে ফিরছিলাম, বিরাট কোহলি মাঠে ঢুকছিলেন। বিরাট ভাই আমার সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেন, 'খুবই ভালো বোলি।' তিনি আমাকে জানান, আমি ভালো বোলিং করছিলাম। পরে আমি তাকে জানাই যে, লাঞ্চের বিরতিতে তার সঙ্গে একটি ছবি তুলতে চাই। যে বলে আমি তাকে আউট করি, সেই বলটি নিয়ে আমি দিল্লির ড্রেসিং রুমে যাই। ওটা একই বল কিনা, সে আমার কাছে জানতে চায়। এরপর মজা করে সে বলতে থাকেন, 'সেই তো, ভালোই মজা পেয়েছিস তাহলে!" বলেন তিনি।