খুলনা রেলওয়ে থানায় গণধর্ষণ : ওসিসহ দু’জন প্রত্যাহার
মাদকদ্রব্যের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো খুলনার এক গৃহিণী ‘থানায় আটকে তাকে গণধর্ষণের’ অভিযোগ তোলার পর খুলনার রেলওয়ে থানার পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
প্রত্যাহার করা এই দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন, খুলনায় জিআরপি থানার ওসি উসমান গণি পাঠান ও এসআই নাজমুল হক।
‘ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ’ তদন্তের স্বার্থে বুধবার (৭ আগস্ট) সকালে তাদের খুলনা জিআরপি থানা থেকে প্রত্যাহার করে পাকশি জেলা রেলওয়ে পুলিশ লাইনে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ।
তিন সন্তানের মা এই গৃহবধুর আদালতে দেয়া জবানবন্দি অনুযায়ী, গত ২ আগস্ট যশোর থেকে ট্রেনে খুলনায় আসার পথে খুলনা রেলস্টেশনে এই নারীকে আটক করেন কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা। পরে গভীর রাতে জিআরপি থানার ওসি উছমান গনি পাঠান ও এসআই গৌতম কুমার পালসহ ৫ পুলিশ সদস্য তাকে ধর্ষণ করে। পরদিন শনিবার তাকে ৫ বোতল ফেন্সিডিলসহ একটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে খুলনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত ফুলতলায় প্রেরণ করে।
৪ আগস্ট আদালতে জামিন শুনানীকালে জিআরপি থানায় গণধর্ষণের বিষয়টি আদালতের সামনে তুলে ধরেন এই নারী। এরপর আদালতের নিদের্শে সোমবার তার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
তবে গণধর্ষণের বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে অস্বীকার করে ওসি উছমান গনি পাঠান বলেছেন, ওই নারীকে মহিলা এসআই ও মহিলা কনস্টেবল পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করে। রাতে তিন নারী পুলিশসহ আট পুলিশ সদস্য থানায় পাহারায় ছিল সেখানে তাকে ধর্ষণের কোনো সুযোগ নেই।
এ ঘটনায় পাকশী রেলওয়ে জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের নির্দেশে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান হিসবে দায়িত্ব পান কুষ্টিয়া রেলওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফিরোজ আহমেদ।
ফিরোজ আহমেদ জানান, তদন্ত কমিটির সদস্যরা খুলনা জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উছমান গণি পাঠানসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে এই নারীর তোলা ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেন।
তিনি বলেন, “পুলিশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়া এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাদের ক্লোজ করা হয়েছে। বাকি তিন পুলিশ সদস্যের বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।”
তবে, তদন্ত কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত ধর্ষণের বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।