গান্ধীজির আদর্শ আজকের পৃথিবীকেও বদলে দিতে পারে, বললেন: শেখ হাসিনা
মহাত্মা গান্ধীর মানবিক আদর্শ ও নীতি সব বিভাজন দূরে ঠেলে ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে বলে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশন মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী পালনের অংশ হিসেবে জাতিসংঘের ইকোসক চেম্বারে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসস ও ইউএনবির।
‘নেতৃত্ব: সমসাময়িক বিশ্বে মহাত্মা গান্ধীর প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসেন লং, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্দা আর্ডেনসহ সাত দেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীরা।
তিনি বলেন, “আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে ঘৃণা ও গোঁড়ামি সন্ত্রাসবাদের দিকে পরিচালিত করছে এবং সহিংস চরমপন্থা মানবজাতিকে আগের চেয়ে আরও বেশি বিভক্ত করছে। বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা, দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মতো চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে মোকাবিলায় গান্ধীজির জীবনদর্শন এবং সব মানুষের প্রতি তাঁর অটল বিশ্বাস আজও আমাদের একত্রিত করতে পারে।”
মহাত্মা গান্ধীকে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, রাষ্ট্রনায়ক ও হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাঁর উজ্জ্বল এবং মন্ত্রমুগ্ধ নেতৃত্ব বিশ্বকে দেখিয়েছিল সহিংসতা ছাড়া অহিংস উপায়ে দুনিয়া-কাঁপানো সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।”
শেখ হাসিনা বলেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক অবস্থান, মানুষের প্রতি তাঁর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, স্নেহ ও মমতা তাঁকে ‘মহাত্মা’ বানিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানের দখলদার হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা চালালে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২৬ মর্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন।
“যখনই আমি বঙ্গবন্ধুর ক্যারিসম্যাটিক নেতৃত্ব, তাঁর ত্যাগ এবং মানুষের পক্ষে সংগ্রামের দিকটি লক্ষ্য করেছি তখনই আমি মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তাঁর অনেক বড় মিল খুঁজে পেয়েছি,” যোগ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
প্রসঙ্গক্রমে, শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের আশ্রয় দেবার কথা বলেন। সম্পদের স্বল্পতা ও অন্যান্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও ভালোবাসা ও মমতা দেখিয়ে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশের আশ্রয় দেবার সিদ্ধান্তের অনুপ্রেরণাও বঙ্গবন্ধু ও মহাত্মা গান্ধীর কাছ থেকেই পাওয়া, জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ ১৯৪৬ সাল থেকে গান্ধী আশ্রম ও ট্রাস্ট বিদ্যমান। যা পল্লী উন্নয়ন, শান্তি ও সামাজিক সম্প্রীতি এবং বিশেষভাবে নারীদের অগ্রগতিতে গুরুত্ব দেয়। তাছাড়া পল্লীর দারিদ্র্য দূর করতে এই আশ্রম ও ট্রাস্ট গান্ধীজির আদর্শ অনুসরণ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।