প্রিয়াঙ্কার অবৈধ গ্রেপ্তার যোগী সরকারের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার প্রকাশ: রাহুল গান্ধী
সংঘর্ষে নিহতদের পরিবারকে দেখতে যাওয়ার পথে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটকের ঘটনায় উত্তর প্রদেশ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, এ গ্রেপ্তার যোগী আদিত্যনাথ সরকারের ক্ষমতার স্বেচ্ছাচারী ব্যবহার।
এ গ্রেপ্তারকে অবৈধ ও বিরক্তিকর আখ্যা দিয়ে টুইটারে রাহুল বলেন, এটি উত্তর প্রদেশে বিজেপি সরকারের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার প্রকাশ।
তিনি জানান, নিজেদের ভূমি থেকে সরে যেতে না চাওয়ায় ১০ আদিবাসী কৃষককে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভারতের উত্তর প্রদেশের পূর্বাঞ্চলীয় সোনভদ্রা জেলায় গত বুধবার (১৭ জুলাই) নারীসহ ১০ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। আজ শুক্রবার (১৯ জুলাই) ঐ গ্রামে যাচ্ছিলেন প্রিয়াঙ্কা।
নিহত ১০ জনের পরিবারের সাথে সোনভদ্রায় দেখা করতে যাওয়ার পথে মির্জাপুর জেলায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে আটক করা হয়।
সংঘর্ষে আহতদের সাথে বারানসিতে দেখা করার পর প্রিয়াঙ্কার সোনভদ্রায় যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাকে মির্জাপুরে আটকে দেয়া হলে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে তিনি রাস্তায় বসে যান।
এ সময় প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘সংঘর্ষে গুলিতে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সাথে আমি শান্তিপূর্ণভাবে দেখা করতে চাই। তাদের সাথে আমাকে দেখা করতে না দেয়ার আদেশটি আমি দেখতে চাই।’
‘আমি জানি না তারা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। আমরা যেকোনো জায়গায় যেতে প্রস্তুত,’ যোগ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের কাছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেছেন, ‘আমি শুধু ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। পুরো পরিবারকে নির্মমভাবে গুলি করে মারা হয়েছে। তাদের মধ্যে আমার সন্তানের বয়সী একজন হাসপাতালে শুয়ে আছে। কোন আইনের ভিত্তিতে আমাকে এখানে আটকানো হয়েছে, তা বলুন।’
৩৬ একর জমিকে কেন্দ্র করে গুজ্জার ও গন্ড সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে বুধবার ১০ জন মারা যায় এবং ২৪ জন আহত হয়। যোগী দত্ত নামের এক গ্রামপ্রধান কৃষকদের ওপর গুলি ছোড়েন। জমি দখল করতে ২০০ লোক ও ৩২ ট্রাক্টর ট্রলি আনেন তিনি। জমি দখলে বাধা পেলে আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে গুলি ছোড়েন তিনি।
এ ঘটনায় ২৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যোগী দত্ত, তাঁর ভাইসহ ৭৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ঘটনার দিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এক টুইটে বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে অপরাধীদের আত্মবিশ্বাস এতটাই বেড়েছে যে তারা দিনের আলোতে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। উবমা গ্রামের ভূমিদস্যুদের হাতে এভাবে খুনের ঘটনা হৃদয়বিদারক। প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রী ঘুমাচ্ছেন। এভাবেই কি রাজ্য অপরাধমুক্ত হবে?
আজকের ঘটনার জন্য যোগী আদিত্য নাথ কংগ্রেসকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস সরকার অতীতে ভূমিদস্যুদের যে সুরক্ষা দিয়েছে, সোনভদ্রার ঘটনা তার একটি উদাহরণ।’