পাকিস্তানি কর্নেলের চোখে ঢাকার পতন
১৬ ডিসেম্বরের দুর্ভাগ্য গোটা জাতিকে প্রতি বছর তাড়িয়ে বেড়ায়⎯সেই সর্বনাশ যারা প্রত্যক্ষ করেছেন এবং এখনো জীবিত আছেন, সে স্মৃতির বোঝা বিশেষ করে তাদেরই। সেই হতভাগ্যদের একজন আমি। সেদিন কায়েদে পাকিস্তান⎯যিনি এক সময় মনে করতেন 'বিভক্ত থাকলেই আমরা টিকে থাকব' সত্যি সত্যি দুই ভাগের একতাবদ্ধ থাকার সব বন্ধন ছিঁড়ে বিভক্তই হয়ে গেল। সেদিন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মুসলমান সেনাবাহিনী সবচেয়ে বড় পরাজয়ের গ্লানি হজম করল। এই দিনটি আমাদের ইতিহাসের কৃষ্ণতম দিন⎯যা সকলকে হতবাক করেছে। কেমন করে ব্যাপারটা ঘটল? পেছনের দিকে তাকিয়ে আমি কয়েকটি দুঃখবহ ঘটনা তুলে ধরব।
১৯৭০ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে পূর্ব-পাকিস্তানে মার্শাল ল'-এর (বেসামরিক বিষয়) দায়িত্বপ্রাপ্ত মরহুম মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী খানের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (জিএসও-১) হিসেবে যোগ দিই। পদের সুবাদে গভর্নর হাউসের সুবিধাজনক স্থান থেকে দৃষ্টি ফেলে দেখার সুযোগ আমি পেয়েছি। পূর্ব-পাকিস্তানে সব কর্মকা-ের মূল ঘাঁটি গভর্নর হাউস। পুরনো নথিতে চোখ বুলিয়ে নেয়ার সুযোগও আমার ছিল, দৈনন্দিন কাজে অনেক পুরনো বিষয় নথি ফুঁড়ে উঁকি দিত। সবকিছু মিলে কী ঘটছে এবং কেন ঘটছে, তার একটা স্পষ্ট চিত্র আমি পেয়েছি।
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, এই সর্বনাশের জন্য কে দায়ী? আমি বলব আমরা সবাই; রাস্তার সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের সর্বোচ্চ আসনে আসীন ব্যক্তি, সকলেই সমানভাবে দায়ী। সাধারণ মানুষ, কারণ ১৯ মার্চ ১৯৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে কায়েদে আজম তার অনুশাসনের আঙুল তুলে যখন বললেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র দাফতরিক ভাষা, তখন থেকে ক্ষোভের যে আগুন জ্বলছিল, সে সম্পর্কে নিজেদের অজ্ঞ রাখার অপরাধ⎯ক্ষোভের গভীরতা মাপার চেষ্টা কেউ করেনি এবং সমঝোতার উদ্যোগও নেয়নি। সর্বোচ্চ পদাধিকারী দায়ী, কারণ তার লোভ, ক্ষমতা-ক্ষুধা এবং স্বার্থপরায়ণতা।
দুর্ভাগ্যবশত আমরা সবাই পূর্ব-পাকিস্তানকে আমাদের একটি উপনিবেশ হিসেবে বিবেচনা করেছি। ৫৪ শতাংশ জনবলসহ পূর্ব-পাকিস্তানই পাকিস্তানের প্রধান অঙ্গ, তা মেনে নিয়ে প্রাপ্য মর্যাদা তাকে দিইনি। পাকিস্তানের ফেডারেল সরকারে 'পাওয়ার ব্যারন'রা এসেছে মূলত পশ্চিম-পাকিস্তান থেকে। স্বেচ্ছায় ও সানন্দে তারা বাঙালি ভাইদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করেননি। ভেবে দেখুন ১৯৫৬ সালে সোহরাওয়ার্দী যখন বাঙালিদের জন্য 'প্যারিটি' সমতা এনে দিলেন, তাদের আনন্দ আর ধরে না। কখনো শুনেছেন 'প্যারিটি' দেয়ার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ সংখ্যালঘুদের ধন্যবাদ দিয়েছে?
১৯৭১ সালে আমরা আবার সেই কাজটা করলাম। সংখ্যালঘুরা সংখ্যাগরিষ্ঠকে ঘোষণা করে জানিয়ে দিল যে, তারা হচ্ছে দেশপ্রেমহীন বিশ্বাসঘাতক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী। যে দেশের ভিত সংখ্যাগরিষ্ঠরা ১৯০৬ সালে তৈরি করেছে তাদেরই দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। বাঙালিদের সঙ্গে কেবল অসম আচরণ করা হয়েছে তা-ই নয়, সোনালি আঁশ পাট যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার ও ডান্ডির পাটকলগুলোতে রফতানি করে তারাই ছিল দেশের প্রধান উপার্জনকারী। পাকিস্তানের অর্থনীতির প্রধান দায় তারাই বহন করেছে। টানা ১৫ বছর ১৯৬২ পর্যন্ত তহবিল এসেছে পূর্ব-পাকিস্তান থেকে পশ্চিমে; তারপর দুই বছরের একটি ভারসাম্যাবস্থার পর এই প্রক্রিয়াটা উল্টে দেয়ার চেষ্টা করা হল, তা-ও খুব সামান্য পরিমাণে। কাজেই বাঙালিদের মন খারাপ করার এবং 'শালা' পাঞ্জাবিদের (তাদের কাছে সব পশ্চিম-পাকিস্তানি ছিল পাঞ্জাবি) ওপর বিরক্ত থাকার সঙ্গত কারণই ছিল।
যদিও ১৯৬৫ সালে ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে বাঙালিরা পশ্চিম-পাকিস্তানিদের ভয়ে বেশি না হলেও সমান দেশপ্রেম যে দেখিয়েছে তাতে সন্দেহ নেই, তবুও দুই অংশের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস প্রত্যাশিত মানের হয়নি। ১৯৭০ নাগাদ সম্পর্ক অনেক খারাপ হয়ে গেল, যা জোড়া লাগানোর আর সুযোগ থাকল না। শেষ যে খড়টি ছিল, তাও ভুট্টোর নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যানে ভেঙে গেল⎯নির্বাচন শেখ মুজিবুর রহমানের আওয়ামী লীগকে কেন্দ্রে সরকার গঠনের সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিয়েছিল। জুলফিকার আলী ভুট্টোর আরেক ঘোষণা⎯"জাতীয় সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে যে ঢাকা যাবে তারই ঠ্যাং ভেঙে দেয়া হবে। উধার তুম, ইধার হাম। পুরো পাকিস্তানে 'আন্ডারডগ' না হয়ে আমি বরং অর্ধেক পাকিস্তানের 'টপডগ' হব।" এটা মুজিব ও তার দলের সন্দেহ স্পষ্ট করেছিল। তারা আইন অমান্যের রাস্তা ধরলেন। দিন যতই গড়াল প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি জোরদার হয়ে উঠল এবং তাদের সঙ্গে পশ্চিম-পাকিস্তানি নেতাদের ও ফেডারেল সরকার প্রধান ইয়াহিয়া খানের সমঝোতা আলোচনা ব্যর্থ হল। গণঅবাধ্যতার আন্দোলন ঠান্ডা করতেই ২৫ মার্চ ১৯৭১ রাতের বেলায় সেনাবাহিনীর আক্রমণ। তারপর টানা ৮ মাস সেনাবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর মধ্যে অন্তর্ঘাতী গেরিলা যুদ্ধ। ২১ নভেম্বর ১৯৭১ সালে ঈদের দিন ভারত পূর্ব-পাকিস্তানের ওপর পুরোদস্তুর আক্রমণ চালাল, যুদ্ধ চলল ২৬ দিন। সম্পূর্ণ প্রতিকূল অবস্থায়।
১. ভারতের কাছে সৈন্য ও রসদে পেছনে পড়ে থাকায়⎯তিন ইন্ডিয়ান কোরের বিপরীতে মাত্র এক, তা-ও অপূর্ণ-সজ্জিত⎯কোনো ট্যাঙ্ক নেই, স্বল্পসংখ্যক আর্টিলারি, কেবল ইনফ্যান্ট্রি এবং এক ব্যাটালিয়ন ইঞ্জিনিয়ার্স।
২. স্থানীয় জনগণের শত্রুভাবাপন্নতা, নাগরিক সহায়তা ছাড়া কোনো সেনাবাহিনী যুদ্ধ করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে জনগণ তাদের শত্রু ভেবেছে এবং গোপন সংবাদ দেয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের সহায়তা দিয়েছে ভারতকে।
৩. যোগাযোগ ও রসদের খারাপ অবস্থা ⎯পশ্চিম-পাকিস্তান থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আসা বন্ধ; ফেব্রুয়ারি ১৯৭০ থেকেই ভারতের উপর দিয়ে উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং ভারত গোপনে 'গঙ্গা এপিসোড' শুরু করেছে, আকাশযুদ্ধে এয়ারকাভার নেই, কেবল এক স্কোয়াড্রন এফ-৮৬; তা-ও ভারতীয় বোমাবর্ষণে কুর্মিটোলা মিলিটারি এয়ারফোর্সের রানওয়ে অকেজো হয়ে পড়ায় উড়তে পারেনি।
এ অবস্থায় কাউকে যদি কৃতিত্ব দিতে হয, তাহলে সেনাবাহিনীকেই। কারণ, নয় মাস লড়াই করে তারা টিকে ছিল। ১৯৭১ সালের দ্বিতীয় ভাগে জনগণ ও মিলিটারি দু'পক্ষকেই মনে হল তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। হতাশ অবস্থায় উভযপক্ষই মহাপ্রলয়ের অপেক্ষা করছে। আমার স্পষ্ট মনে আছে: মেজর জেনারেল রহিম খান, পরে সেক্রেটারি জেনারেল ডিফেন্স, পূর্ব-পাকিস্তানে নতুন পদায়িত হওয়া লেফটেন্যান্ট কর্নেল ও মেজরদের উদ্দেশে ১১ জুলাই, ১৯৭১ বা আগে-পেছনে কোনো-এক দিন বলেন, 'জেন্টলম্যান, পূর্ব-পাকিস্তান প্রদেশের সমগ্র প্রশাসন ভেঙে পড়েছে। আমি কেবল প্রশাসনকে হাঁটুর ওপর দাঁড় করিয়ে রেখেছি। এখন এটাকে ঠিকভাবে দাঁড় করানোর দায়িত্ব তোমাদের।' এরপর তিনি আরো বললেন, আর্মি চিফকে (জেনারেল ইয়াহিয়া খান) কথা দিয়েছি, আমাকে তিন মাস সময় দিন, যদি এর মধ্যে না পারি (আমি মনে মনে বললাম, তাহলে আমাকে ফাঁসিতে ঝোলাবেন!) তিনি আমাকে সরিয়ে দেবেন। আমি খুব অবাক হলাম, জেনারেল পুরো বিষয়টাকে তিন মাসের মধ্যে তার বদলির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন। তিন মাসে তিনি কিছুই ঘটাতে পারবেন না।
আর একবার ইস্টার্ন কমান্ডের জিওসি জেনারেল আমীর আবদুল্লাহ খান নিয়াজি ওরফে টাইগার নিয়াজি, ১৯৭১-এর অক্টোবরে হেডকোয়ার্টার্স থেকে আগত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের ব্রিফিং দেয়ার সময় কেউ যেন পূর্ব-পাকিস্তানের ভয়ানক চিত্র তুলে ধরে কিংবা আরও ট্রুপস চেয়ে তাদের নিরুৎসাহিত না করেন সেই নির্দেশনা দিলেন। তিনি নিজে বললেন, তারা যদি আরও বেশি সৈন্য পাঠায় তা আনন্দের ব্যাপার, যদি না পাঠায়, যত কম তত ভালো।
বোর্ডের ওপর অপারেশনাল মিলিটারি ম্যাপে সবুজ পিন ছেয়ে আছে। অল্প কিছু এলাকায় লাল পিন, মানে মুক্তিবাহিনীর দখলে অথচ তখন ম্যাপটা আসলে লাল পিনে আকীর্ণ থাকার কথা। খুব সন্তুষ্ট হয়ে জেনারেল হেডকোয়াটার্স টিম পূর্ব-পাকিস্তানে কোথাও কোনো সমস্যা নেই, সবাই খুশি-এই ধারণা নিয়ে ফিরে গেল। মাথা পানিতে না ডোবা পর্যন্ত পূর্ব-পাকিস্তানের বিভিন্ন সেক্টর থেকে 'সব আচ্ছা' প্রতিবেদন পশ্চিম-পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে, রাজনৈতিক সমাধানের সুযোগ আর নেই। অথচ জেনারেল ফরমান প্রথম থেকেই রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলে আসছিলেন, কিন্তু সেনাবাহিনীর পদসোপানে অনেক জুনিয়র হওয়ায় তার কথার উপযুক্ত গুরুত্ব দেয়া হয়নি। কারো কারো কাছে মনে হয়েছে এই 'অহমিকার সাহস' ভুল জায়গায় দেখানো হয়েছে⎯তারা সেনাকথনে 'মুরগির মতো সাহসী' খেতাব পেতে চাননি। সত্য খবর থেকে পশ্চিম-পাকিস্তানের সাধারণ মানুষকে বি ত করা হয়েছে, এমনকি যারা দেশের হাল ধরেছিলেন তাদেরও।
পূর্ব পাকিস্তানের বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে আসার চেষ্টাটি আমাদের বেলায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত। আমাদের পক্ষে আন্তর্জাতিক মতামত প্রতিষ্ঠা করা তো দূরের কথা, আমরা তাদের প্রায় সকলকে বিচ্ছিন্নও করে ফেলেছি। ১৯৭১-এর অক্টোবরে ইন্দিরা গান্ধী ১৯টি দেশে দমকা সফর করে বাঙালিদের ওপর বিশেষ করে পূর্ব-পাকিস্তানের হিন্দুদের ওপর পাকিস্তানি কল্পিত আক্রমণের কথা বলে বেড়ান⎯অবশ্য সর্বত্রই তিনি আশ্বস্ত করেন যে পাকিস্তানকে আক্রমণের কোনো পরিকল্পনরা ভারতের নেই। তিনি যখন জনমত তৈরি ও ক্যানভাস করে বেড়াচ্ছেন তখন তার সেনাবাহিনী কলকাতায় হুগলি নদীর পূর্ব তীরে ফোর্ট উইলিয়ামে ইস্টার্ন কমান্ড আক্রমণ পরিকল্পনায় শেষ তুলি বুলিয়ে নিচ্ছে।
আর আমাদের বেলায় প্রেসিডেন্ট নিক্সন যদিও কিছু একটা করার জন্য কিসিঞ্জারকে আদেশ দিয়েছেন, সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগর দিয়ে যাওয়ার সময় রেডিওতে প্রথাগত সৌজন্য-শুভেচ্ছাও দেয়নি কিংবা তিনবার সৌজন্য ভেঁপুও বাজায়নি। আমরা চীনের সঙ্গে একটি জরুরি রেডিও সংযোগ স্থাপনের পর চীন আমাদের কীভাবে সাহায্য করতে পারে তার বহু বার্তা পাঠিয়েছে, যার সাক্ষী আমি নিজে। কিন্তু রাওয়ালপিন্ডিতে মদের ঘোরে থাকা প্রেসিডেন্টের সচিবালয় থেকে জবাব দেয়া হয়নি। আমরা যে বার্তা পেতে পারি তা হচ্ছে 'অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন।' চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বের ওপর আমাদের এতই আস্থা ছিল যে যখন নারায়ণগঞ্জে প্যারাসুটে ভারতীয় সৈন্য নামছিল, অনেকেই ভেবেছিল চীনারা এসে পড়েছে। আমাদের পূর্বা লীয় কমান্ডের ভয় ছিল ভারত পূর্বা লের ভূমি দখল করে নিয়ে মুক্তিবাহিনীকে দেবে এবং মুক্তিবাহিনী সেখানে পতাকা উড়িয়ে ঘোষণা করবে এটা বাংলাদেশ এবং ভারত তাৎক্ষণিকভাবে স্বীকৃতি দেবে। এভাবে বাংলাদেশের জন্ম হবে।
আমাদের সেনাবাহিনীর ছোট ছোট দল সীমান্তে মোতায়েন হল, ধীরে ধীরে তারা দুর্বল হয়ে পড়ল⎯কারণ রসদের মজুত নেই, দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা ব্যূহ নেই, কোনো গভীরতা নেই। সামনে শত্রু (ভারতীয়), পেছনে শত্রু (মুক্তিবাহিনী)। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্তারা কখনো অনুধাবন করেনি ভূখ- নয়, রাজধানী রক্ষা করাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। এটা হওয়ার কথা ওয়ারশ, প্যারিস, মস্কো, বার্লিন⎯আমাদের বেলায় ঢাকা যতক্ষণ-না শত্রুর অধিকারে যাচ্ছে, দেশের পতন ঘটবে না। তারা যদি সব সৈন্য ঢাকায় নিয়ে এসে, ঢাকার জন্য প্রতিরক্ষা দুর্গ তৈরি করত, তিন মাস তারা যুদ্ধ করতে পারত⎯পূর্ব-পাকিস্তান কাহিনীটা তাহলে ভিন্ন হত।
আমরা তারপরও বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঠেকিয়ে রাখতে পারতাম না, তবে ব্যাপারটা ঘটত বিশ্বশক্তিগুলো এবং সম্ভবত জাতিসংঘের হস্তক্ষেপে। পাকিস্তানকে এই পরাজয়ের গ্লানি বইতে হত না।