বিশ্বের দ্রুততম কোয়ান্টাম কম্পিউটার বানাল চীন
প্রযুক্তির দুনিয়ায় তরতর করে এগিয়ে চলেছে চীন। এই ক্ষেত্রে দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে দেশটি। এবার প্রযুক্তি জগতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল বেইজিং—তৈরি করল বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন প্রোগ্রামেবল কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
ইউনিভার্সিটি অভ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি অভ চায়নার গবেষক প্যান জিয়ানওয়ের নেতৃত্বাধীন একটি দল এই কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সিস্টেম তৈরি করেছেন।
আবিষ্কারকদের দাবি, এই কম্পিউটারের সাহায্যে ৮ বছরের হিসাব মাত্র ৭২ মিনিটে করা সম্ভব। যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুততম। সম্প্রতি এই আবিষ্কার নিয়ে একটি গবেষণা নিবন্ধও প্রকাশ করেছেন তারা। যদিও নিবন্ধটি এখনেও পিয়ার-রিভিউড হয়নি। তবে রিভিউয়ের জন্য জমা দেওয়া হয়েছে।
৬৬ কিউবিটের এই দ্রুততম সুপারকম্পিউটারের নাম দেওয়া হয়েছে 'জুশংসি ২.১'। এই কম্পিউটারটি নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে কমপক্ষে কয়েক লক্ষ গুণ শক্তিশালী।
সাধারণ বা 'ক্লাসিক্যাল' কম্পিউটারে যেটা 'বিটস', সেটাই কোয়ান্টাম কম্পিউটারের ক্ষেত্রে 'কোয়ান্টাম বিটস' বা 'কিউবিটস'।
প্যান জিয়ানওয়ের গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, গুগলের ৫৪ কিউবিটের সিকামোর কোয়ান্টাম কম্পিউটার যে দ্রুততায় জটিলতম গাণিতিক সমস্যার সমাধান করতে পারদর্শী, জুশংসি তার চেয়ে অন্তত কয়েক লক্ষ গুণ দ্রুততার সাথে সেই সমস্যার সমাধান করতে পারে।
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের পদার্থবিদ পিটার নাইট এ ব্যাপারে বলেছেন, 'মানতেই হবে, গবেষকরা অসাধ্য সাধন করেছেন। এত তাড়াতাড়ি এমন দ্রুত সুপারকম্পিউটার আমরা বানিয়ে ফেলতে পারব বলে আমার অন্তত আশা ছিল না। এই উদ্ভাবন জ্যোতির্বিজ্ঞান, মহাকাশবিজ্ঞানে তো বটেই, সাধারণ মানুষেরও কাজে লাগবে হয়তো আর কয়েক বছর পর থেকেই।'
কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের হরেক রকমের সুবিধা রয়েছে। কোয়ান্টাম কম্পিউটার এমন কম্পিউটিং শক্তি দেবে যা প্রচলিত ক্ল্যাসিক্যাল কম্পিউটার দিতে পারবে না। যেকোনো সমস্যার ত্বরিত সমাধান দেবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার।
এখনকার কম্পিউটার বিটের হিসাবে চললেও কোয়ান্টাম কম্পিউটার চলে কিউবিটের হিসাবে। এর ফলে এই কম্পিউতারে একসঙ্গে বহুগুণ বেশি তথ্য সংরক্ষণ করা যায়। আবার যে হিসাব করতে কয়েক হাজার বছর লেগে যেতে, কোয়ান্টাম কম্পিউটার তা শেষ করবে মত্রা কয়েক ঘণ্টায়।
এছাড়াও কোয়ান্টাম কম্পিউটার বেশি বিদ্যুৎ খাবে না। কোয়ান্টাম টানেলিং পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে এ কম্পিউটার ১০০ থেকে ১ হাজার গুণ কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করবে।
- সূত্র: ইন্ডিয়া টাইমস