মানুষের রক্তমাখা ১ হাজার বছরের প্রাচীন মুখোশ
১৯৯০-এর দশকে পেরুর এক সমাধিতে প্রত্নতাত্ত্বিক খোঁড়াখুঁড়ির সময় লাল রঞ্জকে রং করা একটি মুখোশ পাওয়া গিয়েছিল। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা নিবন্ধে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, সোনার তৈরি এই মুখোশ ১০০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে পেরুর উত্তর উপকূলে বসবাসকারী সিকান গোত্রের লোকেরা পরত।
ওই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, মুখোশটি খুব সম্ভব মানুষের রক্তে রং করা। যে সমাধি থেকে মুখোশটি আবিষ্কৃত হয়েছিল, ধারণা করা হয় সেটি ইয়াসেমিন সাপলাকোগলু নামে এক অভিজাত গোত্রপতির।
মুখোশটি এক ৪০-৫০ বছর বয়স্ক লোকের বিচ্ছিন্ন খুলিতে পরানো ছিল। বাকি কঙ্কালও কাছেই পাওয়া যায়। উল্টো করে রাখা সেই কঙ্কালও লাল রঙে রাঙানো ছিল।
কবরটিতে আরও চারজন মানুষের কঙ্কাল পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে পাওয়া গেছে একটন মূল্যবান জিনিসপত্র। লাশের সঙ্গে এগুলো দেওয়া হতো। এগুলোর মধ্যে স্বর্ণমিশ্রিত কিছু জিনিসও আছে।
মুখোশটি আবিষ্কারের সময় গবেষকরা ধারণা করেছিলেন যে লাল রঞ্জকটি সিঁদুর হতে পারে। কিন্তু ১ হাজার বছর পরও রংটি কী করে এত উজ্জ্বল রয়ে গেল, তা বুঝতে পারছিলেন না তারা।
সাম্প্রতিক গবেষণায় রঞ্জকটিতে বেশ কিছু প্রোটিনের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ছয়টি প্রোটিন মানুষের রক্তে থাকে। অবশ্য মাস্কোভি হাঁসের রক্তের কিছু প্রোটিনও পাওয়া গেছে রঞ্জকটিতে।
সিকান সভ্যতা নবম থেকে চতুর্দশ শতক পর্যন্ত টিকে ছিল। ৯০০ থেকে ১০৫০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ছিল এ সভ্যতার স্বর্ণযুগ। সিকা সভ্যতার লোকেরা বিশাল মন্দির, সোনার জিনিসপত্র বানাত। এছাড়াও বর্তমান উজান আমাজনের ব্যবসায়িক রুট নিয়ন্ত্রণ করত এই গোত্র।
রঞ্জকে পাওয়া প্রোটিন সত্যিই মানুষের রক্ত নাকি সামান্য রক্ত রঙের সঙ্গে ইচ্ছে করেই মেশানো হয়েছে, তা নিশ্চিত হতে পারেননি গবেষকরা। তবে তারা বলছেন, রক্তটুকু ব্যবহার করা হয়েছিল জীবনীশক্তির প্রতীক হিসেবে।
- সূত্র: স্মিথসনিয়ান ম্যাগাজিন