রাজশাহীতে বাড়ির ছাদে ছাদে ঘুড়ি উৎসব
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/05/01/img_20200428_172442.jpg)
মরণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে সবাইকে গৃহবন্দি জীবনযাপন করতে হচ্ছে। বন্ধ সব আউটডোর খেলাধুলাই। ফলে অফুরন্ত সময় এখন সবার হাতে। এই সুযোগে রাজশাহীতে বেড়েছে ঘুড়ি ওড়ানো। দুপুর থেকেই রাজশাহী মহানগরীর প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদেই দেখা যাচ্ছে, শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ সবাইকে একসাথে ঘুড়ি ওড়াতে। এই যেন প্রতিটি বাড়ির ছাদে ছাদে ঘুড়ি উৎসব। ঘুড়ির সুতোয় কাটাকাটি খেলে কিংবা দূর আকাশে ঘুড়ি পাঠিয়ে এ যেন করোনাকালীন ক্লান্তি ও অবসাদ দূর করার এক সুস্থ প্রতিযোগিতা।
ঘুড়ি উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, প্রতিবছর গ্রীষ্মকালে ঘুড়ি উড়ানো উৎসব চললেও এত বৃহৎ পরিসরে ঘুড়ি ওড়াতে আগে কখনো দেখা যায়নি।
তারা বলছেন, করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘ এক মাস ধরে তারা গৃহবন্দি। কবে এই পরিস্থিতির উন্নতি হবে তা বলা যাচ্ছে না। আবার বাসার কাজ শেষ করার পরও হাতে থাকে অফুরন্ত সময়। ফলে অনেকের মধ্যেই ক্লান্তি ও অবসাদ ভর করেছে। অনেকেই ঘুড়ি উড়িয়ে সেই ক্লান্তি ও অবসাদ ঝেড়ে ফেলতে চান।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/05/01/img_5053.jpg)
নগরীর শহিদ এএইচএম কামারুজ্জামান ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ আল আবির বলেন, কলেজ বন্ধ। সবসময় রুমেই থাকি। বন্ধুদের সাথে মোবাইলে কথা বলা, ফেসবুকিং করা, টিভি দেখা ও বই পড়া এসব তো করিই। কিন্তু কতক্ষণ আর এসব করতে ভালো লাগে। ফলে প্রতিদিন বিকেলের জন্য মুখিয়ে থাকি। এই সময়টা বিকেলে এখন সবাই মিলে ঘুড়ি ওড়ানো হয়। অন্য ফ্ল্যাট থেকে ভাই ও আপুরা আমাদের সাথে যোগ দেন। ভালোই লাগে।
নগরীর কুমার পাড়ার তৌসিফ আহমেদ নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলেন, আমার মনে হয়, দীর্ঘ সময় গৃহবন্দি থাকার ফলে মানুষের মনে যে ক্লান্তি ও অবসাদ জমেছে, এই ঘুড়ি ওড়ানোর সময় তা কেটে যায়। মন চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
![](https://947631.windlasstrade-hk.tech/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/05/01/img_20200429_162338.jpg)
কুমারপাড়ার আব্দুর কাদের নামের আরেকজন বলেন, সবসময় গৃহবন্দি থেকে ছেলেমেয়েরা হাঁপিয়ে উঠেছে। বাইরে গিয়ে খেলাধুলাও করতে পারে না। কতক্ষণ আর ঘরে বন্দি থাকতে পারে। তারপরও এখন বাধ্য হয়ে থাকছে। তাই বিকেলে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতি এত আকর্ষণ। ওদের সাথে আমিও যোগ দিই। ভালোই সময় কাটে।
ঘুড়ি ওড়ানোকে কেন্দ্র করে ঘুড়ি নাটাই ও মাঞ্জা তৈরির কমপক্ষে ৩০টি অস্থায়ী কারখানা গড়ে উঠেছে নগরীজুড়ে। বেচাকেনাও বেড়েছে সমানতালে। আব্দুল কুদ্দুস নামের এক অস্থায়ী কারখানার মালিক বলেন, প্রতিদিন ঘুড়ি, নাটাই ও মাঞ্জা তৈরি করতে সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০০ টির মতো ঘুড়ি বিক্রি হয়। দাম ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকার মধ্যে।
রফিকুল ইসলাম নামের আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, আমার জীবনে এত ঘুড়ি কেনার চাহিদা দেখিনি। প্রতিদিন অনেক ঘুড়ি বিক্রি হয়।