৩৫ বছর বয়সেই মিলিয়নিয়ার হওয়া ব্যক্তিকে তার মায়ের উপদেশ
৩৫ বছর বয়সেই লাখ লাখ ডলার উপার্জন মুখের কথা নয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের বাসিন্দা ড্রক তা করে দেখিয়েছেন। ১২ বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর আজ লাখ লাখ ডলারের মালিক তিনি।
তবে শুধু কঠোর পরিশ্রমই নয়, মায়ের দেখানো পথ অনুসরণ করেই সফলতার খোঁজ পেয়েছেন তিনি।
গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি ব্লগপোস্ট থেকে জানা যায়, ড্রক মিলিয়নিয়ার হওয়ার এক মাস আগেই তার মা অবসর নেন। লাখ লাখ ডলারের সম্পত্তি নিয়ে ৬২ বছর বয়সে অবসর নেন ওই নারী। মাকেই তার জীবনের একমাত্র ইনফ্লুয়েন্সার মনে করেন ড্রক।
তিনি জানিয়েছেন, তার মায়ের কর্মজীবন ও পথচলার নানা পর্যায় থেকে পেয়েছেন ৫টি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। মায়ের দেওয়া শিক্ষাই তার অর্থনৈতিক সফলতা এনে দিয়েছে।
ড্রকের অনুসৃত সেই পাঁচটি উপদেশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:
উপার্জনের উৎসে বৈচিত্র্য
প্রথাগত চাকরি ছাড়াও কর্মজীবনে ড্রেকের মা উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিকূল সব পথেই হেঁটেছেন তিনি। রাতে অতিরিক্ত শিফটের কাজ, সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করা ছাড়াও, বয়স ৫০ পেরোনোর পরও বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং করেছেন।
ড্রকের ভাষ্যে, 'মায়ের কর্মব্যস্ততাই আমাকে শিখিয়েছে প্রথাগত ৯-৫টার চাকরির সঙ্গে আরও অনেক কিছু করা সম্ভব।'
ড্রকের সাইড বিজনেসের মূল্যমানই বর্তমানে ৪০ হাজার ডলার।
রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ
ড্রকের স্ত্রী একটি বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা। পার্শ্ব আয়ের উৎস হিসেবে স্বামীর সঙ্গে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করেন। বাড়তি আয়ের উৎস রাখার এ কৌশলও তরুণ বয়সে মায়ের কাছেই শিখেছিলেন ড্রক।
২০০৯ সালে তিনি প্রথম রেন্টাল প্রোপার্টি কেনেন তিনি। সে সময় তিনি বার্ষিক ৩০ হাজার টাকার বেতনে চাকরি করতেন।
'মা আমাকে শিখিয়েছিলেন রিয়েল এস্টেটে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করলেও ভালো সুফল পাওয়া যায়,' বলেন ড্রক।
২০১৪ সালে ড্রক ও তার স্ত্রী ১ লাখ ১৫ হাজার ডলারে তাদের দ্বিতীয় রেন্টাল প্রোপার্টি কেনেন। ১০ হাজার ডলারে মেরামতের পর সেটি ভাড়া দেওয়া হয়, বর্তমানে যার মূল্যমান ১ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ
অর্থ উপার্জনের জন্য স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ ড্রকের জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। তিনি বলেন, 'আমার বাবা-মা আমাকে ও আমার ভাইকে শৈশবেই ব্লু- চিপ স্টক দিয়েছিলেন। আমাদের নানা সময়ে এর বাজারদরের হিসাব রাখতে হতো। সে সময় সংবাদপত্র দেখে কাজটি করতে হতো। এখন তো এটি ভাবাই যায় না!'
ড্রক ও তার স্ত্রীর স্টক বিনিয়োগ বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ ডলার।
নতুন দক্ষতা অর্জন
ড্রকের মা তার কর্মজীবনে বিভিন্ন ধরনের কাজ করেছেন, নানা পর্যায়ে ক্যারিয়ারের মোড় বদলেছেন। অপরিচিত কিছু তাকে দমাতে পারেনি। চ্যালেঞ্জ ধরে নিয়েই এগিয়েছেন তিনি।
'মা আসলে সকল কাজের কাজি। কম্পিউটার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিপণন, অর্থব্যবস্থা, বাগান করা- কী পারেন না তিনি! মায়ের সবসময়ই নতুন নতুন জিনিস শেখার ব্যাপারটি সবসময়ই মুগ্ধ করেছে আমাকে,' ভাষ্য ড্রকের।
রেন্টাল প্রোপার্টি কেনা বা সাইড বিজনেসের ট্যাক্স প্ল্যানিং, ব্লগিং বা পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি, সবক্ষেত্রেই ড্রক তার মায়ের নীতি অনুসরণ করেন।
সহনশীল হওয়া
ড্রকের মায়ের মিলিয়ন ডলার ক্লাবে প্রবেশের পথটা সহজ ছিল না। একাধিকবার তিনি ব্যবসা গড়ে তুলে আবার হুমড়ি খেয়েছেন।
ড্রকের ভাষ্যে, 'অবশ্যই সবার জীবনে উত্থান-পতন আছে। কিন্তু যতবারই মা ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছেন, প্রতিবারই নিজেকে সামলে নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে সামনে এগিয়ে গেছেন। আমি তার এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও দৃঢ়তা অনুকরণের চেষ্টা করেছি সবসময়।'
- সূত্র: বিজনেস ইনসাইডার