ব্রিটেনের রাজার কাজগুলো কী?
সুদীর্ঘ ৭০ বছর ব্রিটেনে সিংহাসনে আসীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) ৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তার মৃত্যুর পর রাজা হয়েছেন প্রিন্স অভ ওয়েলস চার্লস। রাজা তৃতীয় চার্লস হিসেবে পরিচিত হবেন তিনি।
রাজার দায়িত্ব কী?
যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান রাজা। তবে তার ক্ষমতা কেবলই প্রতীকী। তিনি রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকেন।
সরকার থেকে রাজার কাছে প্রতিদিন একটি লাল রঙের চামড়ার বাক্স পাঠানো হয়। ওই বাক্সে দৈনন্দিন কাজের নথিপত্র থাকে। এসব নথির মধ্যে থাকে গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের ব্রিফিং, রাজার স্বাক্ষরের প্রয়োজন এমন কাগজপত্র ইত্যাদি।
নিয়ম অনুযায়ী, দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সপ্তাহের প্রতি বুধবারে বাকিংহাম প্রাসাদে রাজার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে রাজাকে সরকারি বিষয়গুলো নিয়ে অবগত করবেন।
প্রধানমন্ত্রী ও রাজার এ সাক্ষাৎকারগুলো সম্পূর্ণ গোপনীয় এবং এগুলোর সরকারি কোনো রেকর্ড রাখা হয় না।
রাজাকে পার্লামেন্ট বিষয়ক কিছু কাজ করতে হয়:
সরকার নিয়োগ দেওয়া- যে দল সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে, তার প্রধানকে বাকিংহাম প্রাসাদে ডাকা হয়। সেখানে তাকে নতুন সরকার গঠনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এছাড়া সাধারণ নির্বাচনের আগে রাজা আনুষ্ঠানিকভাবে সরকার ভেঙে দেন।
স্টেট ওপেনিং ও রাজার বক্তৃতা- রাজা স্টেট ওপেনিং অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পার্লামেন্টের বর্ষ শুরু করেন। তিনি হাউজ অভ লর্ডসে সিংহাসনে বসে দেওয়া এক বক্তৃতার মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
রাজকীয় সম্মতি- পার্লামেন্টে কোনো অনুশাসন পাস হওয়ার পর তা আইনে পরিণত করার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে রাজার অনুমোদনের প্রয়োজন পড়ে। একে রয়্যাল অ্যাসেন্ট বলা হয়। শেষবার কোনো রয়্যাল অ্যাসেন্ট প্রত্যাখান করা হয়েছিল ১৭০৮ সালে।
এর পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা যখন ব্রিটেন সফের যাবেন, তখন রাজা তাদের অভ্যর্থনা জানাবেন। এছাড়া তিনি যুক্তরাজ্যে থাকা বিদেশি অ্যাম্বাসেডর, ও হাইকমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। লন্ডনের সেনোটাফে বার্ষিক রিমেমব্রেন্স অনুষ্ঠানও পরিচালনা করবেন রাজা।
নতুন রাজা কমনওয়েলথের প্রধানও। ৫৬টি স্বাধীন দেশের জোট কমনওয়েলথ। এর মধ্যে ১৪টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানও রাজা। এ ১৪টি দেশ কমনওয়েলথ রিয়ালম নামে পরিচিত।
সূত্র: বিবিসি