শন কনারি থেকে ড্যানিয়েল ক্রেইগ, বাস্তবে কোন জেমস বন্ড সবচেয়ে বেশি ধনী?
বন্ড, জেমস বন্ড। একটা প্রজন্মের পুরুষদের কাছে পৌরুষের চূড়ান্ত প্রতীক ছিলেন ডাবল-ও-সেভেন। জেমস বন্ডের চরিত্রে কাজ করা অভিনেতারা পেয়েছেন স্টারডমের খ্যাতি। সেইসঙ্গে তাদের জুটেছে বিস্তর নগদ নারায়ণও। শন কনারি থেকে শুরু করে হালের ড্যানিয়েল ক্রেইগ; লম্বা যাত্রা জেমস বন্ড ফ্র্যাঞ্জাইজের। বন্ড চরিত্রে অভিনয় করা বিভিন্ন তারকাদের মধ্যে কার কত সম্পদ, সে তথ্য জানিয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
গত ৬০ বছরে ২৫টি অফিসিয়াল জেমস বন্ড সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এগুলোতে অভিনয় করেছেন ছয় জন অভিনেতা: শন কনারি. জর্জ লেজেনবি, রজার মুর, টিমোথি ডাল্টন, পিয়ার্স ব্রসনান, ও ড্যানিয়েল ক্রেইগ।
আগামীতে জেমস বন্ড কে হতে যাচ্ছেন? হেনরি ক্যাভিল, টম হার্ডি, অ্যারন টাইলর জনসন, ও রিজ-জ্যঁ পেজের নাম আছে এ তালিকায়। ভবিষ্যৎ জেমস বন্ড প্রতি সিনেমায় কত আয় করবেন তা সময়ই বলবে। তার আগে যেনে নেওয়া যাক জেমস বন্ড চরিত্রে অভিনয় করা শিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে ধনী কে।
জর্জ লেজেনবি- ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা জর্জ লেজেনবি সবচেয়ে তরুণ বন্ড অভিনেতা হিসেবে ২৯ বছর বয়সে ১৯৬৯ সালে অন হার ম্যাজেস্টি'স সিক্রেট সার্ভিস-এ অভিনয় করেন। সমালোচকদের কাছ থেকে তার অভিনয়ের মিশ্র প্রতিক্রিয়া এলেও গোল্ডেন গ্লোবের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন তিনি।
১৯৬০-এর দশকে মডেল হিসেবে নিজের খ্যাতির শীর্ষে ছিলেন লেজেনবি। বন্ড চরিত্রে অভিনয় করার পর বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও রিয়াল এস্টেট থেকে বিস্তর অর্থ আয় করেছিলেন তিনি।
টিমোথি ডাল্টন- ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
টিমোথি ডাল্টনের বন্ডকে অনেকে সবচেয়ে 'আন্ডাররেটেড' বন্ড হিসেবে বিবেচনা করেন। ব্রিটিশ অভিনেতা ডাল্টন দ্য লিভিং ডেলাইটস (১৯৮৭) ও লাইসেন্স টু কিল (১৯৮৯) সিনেমায় অভিনয় করেন।
বন্ডে অভিনয় করার আগে নাটকে অভিনয় করতেন ডাল্টন। সিনেমায় অভিনয়ের আগে শেক্সপিয়ারের নাটকে তাকে নিয়মিত বিভিন্ন চরিত্রে দেখা যেত।
রজার মুর- ১১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
৪৫ বছর বয়সে বন্ডের চরিত্রে প্রথমবারের মতো অভিনয় করেন রজার মুর। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে 'বয়স্ক বন্ড' তিনি।
মোট সাতটি সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন মুর। এগুলো হচ্ছে লিভ অ্যান্ড লেট ডাই (১৯৭৩), দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান (১৯৭৪), দ্য স্পাই হু লাভড মি (১৯৭৭), মুনরেকার (১৯৭৯), ফর ইওর আইজ অনলি (১৯৮১), অক্টোপুসি (১৯৮৩), এবং আ ভিউ টু আ কিল (১৯৮৫)।
মুরের এত সম্পদের উৎস তার টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে বিস্তৃত ক্যারিয়ার। দাতব্য কাজের জন্যও পরিচিত ছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ৮৯ বছর বয়সে মারা যান এ অভিনেতা।
ড্যানিয়েল ক্রেইগ- ১৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
জেমস বন্ডে অভিনয় করার সুবাদে ড্যানিয়েল ক্রেইগ তারকাখ্যাতির শীর্ষে ওঠেন। ক্যাসিনো রয়্যাল (২০০৬), কোয়ান্টাম অব সোলেস (২০০৮), স্কাইফল (২০১২), স্পেক্টর (২০১৫), ও নো টাইম টু ডাই (২০২১); এ পাঁচটি সিনেমায় অভিনয় করেছেন ক্রেইগ।
ভ্যারাইটি'র তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বন্ড ফিল্মের জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার করে নিয়েছিলেন ড্যানিয়েল ক্রেইগ। এর ফলে তিনি হয়ে ওঠেন হলিউডের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া শিল্পীদের মধ্যে একজন।
ক্রেইগের সম্পদের বেশিরভাগের উৎস তার সিনেমা থেকে আয় ও বন্ডকে নিয়ে তৈরি করা স্পিন-অফ ভিডিও গেম।
পিয়ার্স ব্রসনান – ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
আইরিশ বংশোদ্ভূত পিয়ার্স ব্রসনানকে অনেকে রুপালি পর্দায় বন্ডের সবচেয়ে আদর্শ চিত্রায়ণ হিসেবে মনে করেন। গোল্ডেনআই (১৯৯৫), টুমরো নেভার ডাইজ (১৯৯৭), দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ (১৯৯৯), ও ডাই অ্যানাদার ডে (২০০২) সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
প্রথম বন্ড ফিল্মের জন্য ব্রসনান চার মিলিয়ন ডলার মাইনে পেয়েছিলেন বলে জানা যায়। সবশেষ সিনেমায় তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৬.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
শন কনারি – ৩৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার
প্রয়াত আইরিশ অভিনেতা শন কনারিকে প্রায়ই সর্বকালের সেরা বন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাতটি সিনেমায় দুর্দান্ত এ স্পাই চরিত্রে অভিনয় করেছেন কনারি। এগুলো হলো: ড. নো (১৯৬২), ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিংগার (১৯৬৪), থান্ডারবল (১৯৬৫), ইউ অনলি লিভ টোয়াইস (১৯৬৭), এবং ডায়মন্ডস আর ফরেভার (১৯৭১)।
পর্দায় বন্ডকে প্রথমবারের মতো জীবন্ত করেন শন কনারি। ড. নোতে তার মুখ থেকেই প্রথম 'বন্ড… জেমস বন্ড' শুনতে পায় দর্শকেরা।
জেমস বন্ডের বাইরেও নিজের ক্যারিয়ারে অসংখ্য জনপ্রিয় ও ব্যবসায়সফল সিনেমায় অভিনয় করেছেন কনারি। একটি অ্যাকাডেমি পুরস্কার, দুটি বাফটা পুরস্কার ও তিনটি গোল্ডেন গ্লোব জিতেছেন এ অভিনেতা; আর এ সবই ঘটেছে বন্ড চরিত্র ছেড়ে আসার পর।