ই-কমার্সের প্রয়োজনীয় নীতিমালা দরকার: ড. মসিউর রহমান
তথ্য-প্রযুক্তির এ যুগে দেশের ই-কমার্স খাতকে বাধা না দিয়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
শনিবার দ্য লয়ারস অ্যান্ড জুরিস্টসের 'করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পূর্ণরুদ্ধার- কতটা প্রস্তুত ব্যাংকিং খাত' শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির ব্যক্তব্যে মসিউর রহমান এসব কথা বলেন।
মসিউর রহমান বলেন, "একাধিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু যেসব গ্রহক অতিরিক্ত লাভের আশায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে টাকা দিয়েছে তাদেরও বোঝার দরকার ছিল।"
"আমি তাদেরকে বলব আপনাদের আরও সাবধান হওয়া দরকার। এছাড়া তদের সব ধরনের ক্ষতিপূরণ সরকারের দেওয়াটাও সমীচীন নয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হতে যে পদ্ধতিগত দুর্বলতা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেগুলো চিহ্নিত করবে বলে আশা করছি,"
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনুরুজ্জীবিত করতে ব্যাংলাদেশ ব্যাংক যে ধরণের প্রণোদান প্যাকেজে ঋণ সুবিধা দিয়েছে তার প্রশংসা করেম তিনি।
"তবে ব্যাংকগুলো বিতরণকৃত ঋণের টাকা কীভাবে আদায় করবে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া দরকার এখন," বলেন তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, "ই-কামার্স খাতে এখন যে ধরনের অনিয়ম দেখা যাচ্ছে তাতে বোঝা যায় আমাদের কম্পিউটার লিটারেসির অভাব এবং আইটিতে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে,"
ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড় গেছে বলে জানান তিনি।
"গভর্নেন্স নেই, এ ধরনের সমস্যার প্রধান কারণগুলো খুঁজতে হবে। রেগুলেশনে যে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলো ঠিক করতে হবে এবং যথাযথ মনিটরিং করতে হবে। একইসঙ্গে যথাসময়ে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে।"
যে ব্যাংকগুলো সিআরআর, এসএলআর রাখতে পারছেনা তাদেরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সুযোগ দিচ্ছে এটা ব্যাংকিং খাতের জন্য ভালো দিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করোনাকালে প্রণোদানা প্যাকেজ খুবই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাস্তবায়ন হয়েছে। তবে ছোট ছোট উদ্যোক্তারা তেমন ঋণের টাকা পায়নি। এসমই সেক্টর এখনও বঞ্চিত হচ্ছে। আমি নিজেও অনেকের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়গুলো জেনেছি। তাই প্রান্তিক পর্যায়ে এসএমই ও কৃষিখাতসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খাতে ঋণের দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, "গত বছরের দেশে কোভিড দেখা দেওয়ার পর সকল অর্থনৈতিক কার্যক্রম অনেকটা থমকে যাওয়ার পথে বসে। দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সরকার ৫ এপ্রিল প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে।
চলতি বছরের ২০ জুন পর্যন্ত সবকয়টি প্রণোদানা প্যাকেজের প্রায় ৮০ শতাংশের বেশি বাস্তবায়ন হয়েছে।"
তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসএমই খাতকে খুবই গুরুত্বসহকারে দেখছে। নারী উদ্যেক্তারা মাত্র ৫ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে পারছে। অতিক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো মাত্রা ৭ শতাংশ সুদের ঋণ সুবিধা পাচ্ছে," যোগ করেন তিনি।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের এমডিও সিইও বলেন, "এসএমই ঋণ বিতরণে সবগুলো ব্যাংক দুর্বল পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় দপায় এসএমই ঋণ আগে যারা পেয়েছে তাদের পরিবর্তে নতুনদের ঋণ দেওয়াটা কিছুটা কঠিন। তবে আমরা চেষ্টা করব যারা কোভিডে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ প্রদানে।"
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ.এম.মাসুম বলেন, "কিছু ই-কমার্স কোম্পানির কারণে অনেক লোক প্রতারিত হয়েছে। তবে এ খাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ব্যাংকিং খাতের যাদের সম্পৃক্ততা রয়েছে তাদের সচেতনতার অভাব ছিল। প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়টি যদি যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ করতো তাহলে এত মানুষ প্রতারণার শিকার হতো না।"