ওমরাহ হজে গিয়ে নিখোঁজ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী
ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব গিয়ে উধাও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী। পরিবারের সঙ্গেও সকল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে তাদের। হজে যাওয়ার পর থেকে নানা চেষ্টা করেও তাদের খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার ও আইনশৃংখলা বাহিনী। ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, ফলে এখনো দেশে ফিরে না আসায় আতঙ্কিত স্বজনরা। এ ঘটনায় ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের সন্ধানে কাজ করছেন তারা।
জানা যায়, গত ২৫ জানু্য়ারি ওমরাহ পালন করতে সৌদি আরব যান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী। তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আল আমিন, শেখ মিজানুর রহমান, ফাহিম হাসান খান এবং কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী আব্দুল মোমেন।
আল আমিন ও শেখ মিজানুর রহমান সৌদি আরব যান ময়মনসিংহের সাদমান ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে। আর ফাহিম হাসান খান ও আব্দুল মোমেন যান ঢাকার বিএসএস ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে।
সাদমান ট্রাভেলস এজেন্সির স্বত্ত্বাধিকারী মো. হাসানুজ্জামান জানান, সৌদি আরব পৌঁছে হোটেল থেকে পালিয়ে গেছেন তারা। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে সৌদি আরবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছেন তারা। সেই সঙ্গে গত ৫ জানুয়ারি ময়মনসিংহ কতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে।
নিখোঁজ চারজনই বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তবে নিখোঁজের বিষয়টি জানতেন না বলে জানান তাদের সহপাঠীরা।
তাদের সহপাঠী মো. নাবিল তাহমিদ জানান চারজনই দীর্ঘদিন ধরে তাবলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে তাদের নিখোঁজের বিষয়ে তারা কিছু জানতে পারেননি। সোহরাওয়ার্দী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহাবুবর রহমান জানান নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হজে গেছেন সেটিও জানা নেই তাদের। তবে তার ধারণা সৌদি আরবে গিয়ে কোনো বিপদে বা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে কিনা তা খোঁজ নেওয়া দরকার।
এদিকে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও এখনো দেশে ফিরে না আসায় উদ্বিগ্ন তাদের পরিবারের সদস্যরা। পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে কয়কজন অভিভাবক জানান, তারা পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। নিখোঁজ সন্তানদের ফিরে পেতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মোহা. আহমার উজ্জামান জানান, নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের সন্ধানে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল হক বলেন, পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। আমরা এ বিষয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করছি।
গত ৯ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অরেক শিক্ষার্থী ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী শেখ ইফতেখারুল ইসলাম আরিফ। একমাস পর জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে কাজ করার অভিযোগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গ্রেফতার হয় সে। এর রেশ কাটতে না কাটতেই একসঙ্গে আরও চার শিক্ষার্থী নিখোঁজের ঘটনা জানাজানি হওয়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে ক্যাম্পাসে।