সড়ক দুর্ঘটনায় বুয়েট-ছাত্র নিহত: মামলা নিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদ নিহতের ঘটনায় মামলা নিতে পুলিশ অসহযোগিতা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তার সহপাঠীরা।
আজ শনিবার দুপুরে বুয়েটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লিখিত এক বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, মামলা নিতে পুলিশ অসহযোগিতা করেছে।
বিবৃতিটি পাঠ করেন নিহত মুহতাসিমের তিন সহপাঠী। তারা সবাই কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, সহপাঠী নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সর্বোচ্চ বিচার নিশ্চিতের দাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবেন তারা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মুহতাসিমকে গাড়িচাপা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছায়। পুলিশ প্রাইভেট কারের চালকসহ তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য প্রথমে রূপগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় এবং পরে তাদের রূপগঞ্জ থানায় নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরাও তাদের সঙ্গে থানায় পৌঁছান। থানায় ঘটনার বিবরণ জানার পরে কর্তব্যরত উপপরিদর্শক (এসআই) মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা প্রকাশ করেন এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসহযোগিতামূলক আচরণ করেন।
তারা বলেন, পরদিন সকাল ৮টায় আরেক দল শিক্ষার্থীসহ বুয়েটের কয়েকজন শিক্ষক, প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও প্রধান নিরাপত্তাকর্মী থানায় যান। তখন থানায় কোনো ওসি ছিলেন না। ঘণ্টাখানেক পর ওসি থানায় আসেন এবং শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন- আসামিপক্ষের আইনজীবী বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন। এছাড়া গণমাধ্যমে 'হত্যাকাণ্ড'কে দুর্ঘটনা বলে প্রচার করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি থেকে পাঁচটি দাবি হলো- মুহতাসিম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, আহতদের চিকিৎসার ব্যয় বিবাদীপক্ষকে বহন করতে হবে, মুহতাসিমের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া, তদন্তে কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া ও ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
জানতে চাইলে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা লিয়াকত আলী টিবিএসকে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে একটি মামলা দায়ের করে। তারপরও শিক্ষার্থীদের এ অভিযোগ দুঃখজনক।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল উপশহরের ৩০০ ফুট নীলা মার্কেট (কুড়িল-কাঞ্চন সড়ক) এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় বুয়েটের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মুহতাসিম (২২) নিহত হন। আহত হন মেহেদী হাসান খান (২২) ও অমিত সাহা (২২)। তারা দুজনও সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- প্রাইভেট কারচালক মুবিন আল মামুন (২০), মিরাজুল করিম (২২) ও আসিফ চৌধুরী। তারা তিনজনই শিক্ষার্থী। ডোপ টেস্টে তাদের দুজনের শরীরে অ্যালকোহলের উপস্থিতি ধরা পড়েছে।