কলিমুল্লাহ’র বক্তব্য রুচি বিবর্জিত: শিক্ষা মন্ত্রণালয়
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার জবাব দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে সরকারের এ মন্ত্রণালয়।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এর পাঠকদের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিটি হুবহু তুলে ধরা হল:
১। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে নানা ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) বরাবর তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়;
ইউজিসি তাদের নিয়ম অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণে তদন্ত সম্পন্ন করে মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করে। ইউজিসি একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান বিধায় এ প্রক্রিয়ার কোন পর্যায়ে মন্ত্রণালয় বা মন্ত্রীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রভাব বিস্তারের কোন সুযোগ নেই এবং এ সংক্রান্ত জনাব নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ সাহেবের অভিযোগ অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
২। জনাব কলিমুল্লাহ সরাসরি শিক্ষা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কিছু ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বক্তব্য রেখেছেন যা নিতান্তই অনভিপ্রেত। তিনি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়ে যে সভাটিতে মন্ত্রীর দেরিতে উপস্থিতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন সে সভাটি গত ১৯/২/২০২০ তারিখ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সকালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও পরে সভাটির সময় পরিবর্তন করে বিকালে নেয়া হয়। ঐ একই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের অভিন্ন ন্যূনতম নির্দেশিকা প্রণয়ন সংক্রান্ত আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সভা থাকায় এবং সে সভাটি উপাচার্য মহোদয়দের সাথে আলোচনার পূর্বে হলে ভালো হয় বিবেচিত হওয়ায় উপাচার্য মহোদয়দের সাথে সভাটির সময় পরিবর্তন করা হয়েছিল। শিক্ষক নিয়োগের অভিন্ন ন্যূনতম নির্দেশিকার সভাটি নির্ধারিত সময়ের চেয়েও অনেক প্রলম্বিত হওয়ায় শিক্ষামন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মহোদয়, সচিব মহোদয় এবং ইউজিসির চেয়ারম্যান মহোদয়সহ প্রতিনিধিবৃন্দের উপাচার্য মহোদয়দের সাথে অনুষ্ঠিত সভায় যোগ দিতে দেরি হয়। এবং মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় উপস্থিত সকলের কাছে অনিচ্ছাকৃত এই বিলম্বের জন্য বিশেষভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের সময়ানুবর্তিতার বিষয়টি সবার কাছে সুবিদিত। তিনি সময় মতো সকল সভায় অংশ নেন। সেদিনের সবারই অনিচ্ছাকৃত বিলম্বকে নিয়ে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে মাননীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে জনাব কলিমুল্লাহ যে বক্তব্য রেখেছেন তা শুধু অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনকই নয় নিতান্তই রুচি বিবর্জিত।
৩। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রকাশনার জন্য মাননীয় মন্ত্রীর একটি বাণী একবার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাওয়া হয়েছিল। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বড় ধরনের ছাত্র আন্দোলন চলছিল। সে পরিস্থিতিতে মাননীয় মন্ত্রী সে বাণীটি দেয়া সমীচীন মনে করেননি। এবং এরপরে বিগত এক বছরে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাননীয় মন্ত্রীর কাছে আর কোন বাণী চাওয়া হয়নি।
৪। জনাব কলিমুল্লাহ উপরোক্ত বিষয় সমূহের বাইরেও মাননীয় মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার কথা উল্লেখ করে রাজনীতিকে জড়িয়ে কিছু মন্তব্য করেছেন যার সাথে মন্ত্রণালয়ের কোনো বিষয়ের কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা না থাকায় এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে।
৫। জনাব কলিমুল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে তার বক্তব্যে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে যেসব বক্তব্য রেখেছেন সে সকল বিষয়ে এ মুহূর্তে মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকছে। কারণ তার বিরুদ্ধে উন্নয়ন প্রকল্প সংক্রান্ত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে ইউজিসি কর্তৃক প্রেরিত হয়েছে। সে বিষয়ে শীঘ্রই মন্ত্রণালয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতি সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় জনাব কলিমুল্লাহ কর্তৃক সংবাদ সম্মেলনে প্রদত্ত অন্যান্য সকল বক্তব্য সম্পর্কে মন্ত্রণালয় প্রতিবেদন প্রাপ্তি ও বিবেচনার পর যথাযথ প্রক্রিয়ায় বক্তব্য উপস্থাপন করবে।