কুমিল্লায় স্ত্রী নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল, স্বামী গ্রেপ্তার
কুমিল্লার লালমাইয়ে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় নির্যাতনকারী স্বামী নাজমুল হাসান (২৫) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে নিজ গ্রাম থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বড় চলুন্ড গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে নাজমুল হোসেনের সাথে একই উপজেলার বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের প্রেমনল গ্রামের কৃষক মমতাজ উদ্দিনের মেয়ে মরিয়ম আক্তার আইরিনের (১৯) সাথে বিয়ে হয় বছর দুয়েক আগে। বিয়ের কিছুদিন পরই স্বামী নাজমুলসহ তার পরিবারের সদস্যরা আইরিন কে ৩ লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ সৃষ্টি শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা আইরিনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। যৌতুকের টাকা সংগ্রহ করতে ব্যার্থ হয়ে আইরিন বাবার বাড়ীতে বসবাস শুরু করে। গত ৭ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে শ্বশুর বাড়ীতে গেলে আইরিনকে যৌতুকের দাবিতে পুনরায় শারীরিক নির্যাতন করে শ্বশুরবাড়ীর লোকজন। একপর্যায়ে স্বামী নাজমুল আইরিন কে ঘরে থেকে বের করে টেনে-হিঁছড়ে রাস্তায় নিয়ে আঁছড়ে ফেলে। ওই নির্যাতনের ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পরবর্তীতে স্যোসাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
বিষয়টি নজরে আসলে লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব খোঁজ নিয়ে নির্যাতিতা ওই নারীকে থানায় ডেকে নির্যাতনের পুরো বিষয়টি জানেন।
ঐ দিনই আইরিন আক্তার স্বামী নাজমুল হাসান, শ্বাশুড়ী শামীমা বেগম, ভাশুর নজরুল ইসলাম ও শ্বশুর আবুল খায়েরের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
পরে তাৎক্ষনিক লালমাই থানা পুলিশের একাধিক টিম আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। ২০এপ্রিল রাত ১০ টায় মামলার তদন্তকারী অফিসার পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম নাজমুলকে নিজ গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে ।
এ ব্যাপারে লালমাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আইয়ুব দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "নির্যাতনের ঘটনাটি সোস্যাল মিডিয়ায় দেখেই নির্যাতিতা নারীকে সনাক্ত করি এবং তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় রেকর্ড করি। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী নাজমুলকে গ্রেপ্তার করি আমরা।"