গুলশানে তরুণীর মৃতদেহ উদ্ধার, 'আত্মহত্যার প্ররোচনা'য় মামলা
রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর (২১) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহতের নাম মুসারাত জাহান মুনিয়া (২১)। তিনি কুমিল্লার মনোহরপুরের প্রয়াত শফিকুর রহমানের মেয়ে। মুনিয়া রাজধানীর একটি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এ ঘটনায় নিহতের বোন বড় বোন বাদী হয়ে ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ এনে গুলশান থানায় মামলা করেছেন। মামলায় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, "খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ফ্ল্যাট থেকে নিহত তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে প্রেরণ করে"।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, "নিহত তরুণী ফ্ল্যাটটি এক লাখ টাকায় ভাড়া নিয়েছিলেন এবং মার্চ মাস থেকে ফ্ল্যাটটির জন্য মাসিক সার্ভিস চার্জ হিসেবে ১১,০০০ টাকা দেয়া হত। ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন তিনি"।
নিহতের স্বজনের বরাতে পুলিশ আরও জানায়, মুনিয়া রবিবার তার বড় বোনকে ফোন করে বলেছিলেন যে তিনি ঝামেলায় পড়েছেন। এ কথা শুনে তার বোন সোমবার কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে সন্ধ্যার দিকে ওই ফ্ল্যাটে যান। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলেও মুনিয়া দরজা খুলছিলেন না। এর কিছুক্ষণ আগে থেকে তার ফোনও বন্ধ ছিল।
পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোবার ঘরে তার বোন মুনিয়ার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।
সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, "ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে"।
তিনি জানান, "আমরা যথাযথ তদন্তের পরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। আমরা ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি"।
নিহতের বোনের অভিযোগ, মুনিয়ার সাথে সায়েম সোবহান আনভীরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ইফতার পার্টির ছবি শেয়ার করা নিয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়।
এদিকে সায়েম সোবহান আনভীরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তার দুটি ফোন নম্বরই বন্ধ পাওয়া যায়। বসুন্ধরা গ্রুপের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা জানান, আনভীর বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করছেন।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সংবাদদাতা বসুন্ধরা এমডির বাড়িতে, বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা আবু তৈয়ব এবং আনভীরের ব্যক্তিগত সচিব মাকসুদের নম্বরেও ফোন দেন। কিন্তু এদের কেউই সকালে ফোন ধরেন নি।
পেনাল কোডের ৩০৬ ধারা অনুযায়ী, কেউ আত্মহত্যার প্ররোচণা দিলে সে ব্যক্তি আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করলে, প্ররোচণাদানকারীর শাস্তি পেনাল কোড ৩০৬ ধারা মোতাবেক ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানায় দণ্ডিত করা হবে।