চিকিৎসায় খালেদা সন্তুষ্ট: মেডিকেল বোর্ড
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপির কারাবন্দী চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ‘সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না’; খালেদার স্বজন ও বিএনপি নেতাদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
খালেদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান, মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক জিলান মিয়া সরকার সোমবার দুপুরে হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলন করে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সাংবাদিকদের জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “কয়েক দিন পর পর ওনাকে দেখা হয়েছে, উনি সব সময় হাসিখুশি থাকেন। তাঁর ডায়বেটিস, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে।”
মেডিসিন বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, “উনি বারোটার আগে প্রস্তুতি শুরু করেন না। এটা রোগীর ক্ষেত্রে হতে পারে। তাঁকে দেখতে দেখতে একটা দেড়টা বাজে। তিনি অবশ্যই সন্তুষ্ট। ম্যাডাম নিজে সন্তুষ্ট। তাঁকে দেখতে যাওয়ার সময় ওনার (খালেদা জিয়া) প্রিয় দুজন চিকিৎসককেও রাখা হয়। তিনি খুশি হন।”
খালেদা জিয়ার জীবনহানি নিয়ে বিএনপি নেতাদের আশঙ্কা প্রসঙ্গে জিলান মিয়া সরকার বলেন, “আমরা এমন কোনো আশঙ্কা করছি না। তবে জীবন-মৃত্যু আল্লাহর হাতে। তাঁকে নিয়ম মেনে দেখা হচ্ছে। শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখি। উনি সিনিয়র সিটিজেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিচয় তো আছেই।”
বিএনপি চেয়ারপার্সনকে যথাযথ চিকিৎসা না দেয়ায় তার অবস্থা শঙ্কার দিকে যাচ্ছে বলে দলটির নেতা-কর্মী ও পরিবারে পক্ষ থেকে এমন অভিযোগের প্রেক্ষাপটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
এর আগে শুক্রবার খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি হওয়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় তার পরিবার।
বিএসএমএমইউতে বোনের সাথে সাক্ষাত শেষে তিনি বলেছিলেন, “আমার বোনের (খালেদা জিয়ার) অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। তার পা বেঁকে যাওয়ায় তিনি চলাফেরা করতে পারেন না। তার বিছানায় শুতেও সমস্যা হচ্ছে। আমরা তাকে ভালো চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে চাই।”
তিনি দাবি করেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কোনো চিকিৎসক তাকে দেখছেন না এবং কোনো চিকিৎসাও করছেন না।
“তাই আমরা শুধুশুধু কেন তাকে এখানে (বিএসএমএমইউ) ফেলে রাখবো? আমরা তার ভালো চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিয়ে যেতে চাই।”
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ থেকে জেলে রাখা হয়েছে। একই বছর অন্য একটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যদিও তার দলের পক্ষ থেকে দুটিকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক মামলা বলে দাবি করা হচ্ছে। বিএনপি প্রধান গত ১ এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।