ছাত্রী ধর্ষণ : প্রতিবাদে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় বাদি হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা।
অজ্ঞাতপরিচয় একজনকে আসামি করে সোমবার সকালে ওই মামলাটি করা হয় বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন ক্যান্টনমেন্ট থানার ওসি শাহান হক।
তিনি বলেন, “মামলা গ্রহণের পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল ও আসামি শনাক্ত করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাজ চলছে।”
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের প্রতিবাদে মধ্যরাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রলীগ এবং সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এরপর সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যে অনশনে বসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সিফাতুল ইসলাম।
সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভে নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজু ভাষ্কর্যে পুনরায় সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। একই সময়ে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ করে ছাত্রদল।
দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল ১২টি সংগঠনের জোট ‘সন্ত্রাসবিরোধী ছাত্র ঐক্য’। অবরোধে শাহবাগ এলাকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আলামত সংগ্রহে মাঠে নেমেছে র্যাব ও ডিবি
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আলামত সংগ্রহে মাঠে নেমেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাট্যালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা-ডিবি।
সোমবার সকালে কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের বাইরের দিকে একটি ঝোপের মধ্যে কিছু ‘আলামতের’ সন্ধান পান তারা।
নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে র্যাবের এক সদস্য দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “ঝোপের মধ্যে ইউনিভার্সিটির বই, ঘড়িসহ কিছু আলামত আমরা পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি এটিই ঘটনাস্থল। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা আসলে বিস্তারিত জানানো হবে।”
গতকাল রাত থেকে কুর্মিটোলার আশেপাশের সব এলাকায় খুঁজে এই জায়গাটিকে সন্দেহ হয়েছে বলে জানান র্যাবের ওই সদস্য।
ডিবির একটি দলও ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেছে।
রোববার সন্ধ্যায় ক্যাম্পাস থেকে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে নামলে অজ্ঞাতপরিচয় একাধিক ব্যক্তি তাকে মুখ চেপে ধরে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যান বলে তার বন্ধুরা জানিয়েছেন।
তারা জানান, এতে ওই ছাত্রী অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তাকে ধর্ষণ করা হয়। রাত ১০টার দিকে চেতনা ফেরার পর তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বান্ধবীর বাসায় যান। বান্ধবীকে ঘটনা জানানোর পর সহপাঠীরা গিয়ে তাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
ওই ছাত্রীকে দেখতে রাতেই হাসপাতালে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান ও প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী।