ঢাকার ৪৫ শতাংশ অধিবাসীর দেহে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে
রাজধানী ঢাকার ৪৫% বাসিন্দার শরীরে কোভিড-১৯ প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার কথা জানিয়েছে, দেশে এ সংক্রান্ত করা প্রথম এক গবেষণা।
বাংলাদেশ রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা কেন্দ্র (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরমায় রোগ গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) যৌথভাবে এ গবেষণা চালায়। এতে রাজধানীর বস্তিগুলোয় বসবাসকারী ৭৪% অধিবাসীর দেহেও অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গবেষণার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।
গবেষণা চলাকালে রাজধানী ঢাকার ৩,২২৭টি পরিবারের ৫৩৩ জন উপসর্গযুক্ত এবং ৮১৭ জন উপসর্গহীন আক্রান্তের দেহে IgM এবং IgG অ্যান্টিবডি টেস্ট করা হয়।
পাশাপাশি বস্তিতে বসবাসকারী ৯৬০টি পরিবারের ৯৬ জন উপসর্গযুক্ত এবং ৩১৪ জন উপসর্গহীন আক্রান্তদের দেহেও অ্যান্টিবডি দুটি গড়ে উঠছে কিনা- তা পরীক্ষা করে দেখেন দেশের বিজ্ঞানীরা।
আজ ফলাফল প্রকাশের সময় প্রধান গবেষক ফেরদৌসী কাদরি জানান, রাজধানী ঢাকার বাসিন্দাদের মধ্যে অ্যান্টিবডি গড়ে ওঠার এ হার খুবই আশা জাগানিয়া সংবাদ।
'এর মানে হলো; আমরা হার্ড ইম্যুউনিটি বা গোষ্ঠীবদ্ধ ভাইরাস প্রতিরোধী সক্ষমতা অর্জনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছি' আইসিডিডিআরবি'তে কর্মরত সংস্থাটির শীর্ষ এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা উলেখ করেন।
মহামারি সৃষ্টিকারী রোগ বিশেষজ্ঞ মুস্তাক হুসেইন জানান, সাধারণত কোনো অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশের দেহে অ্যান্টিবডি গড়ে উঠলে- তাকে হার্ড ইম্যুউনিটি হিসাবে গণ্য করা হয়।
সেই হিসাবে দেখা গেছে, বস্তিতে বসবাসকারীদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার ঘটনা বেশি ঘটেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত আরেকটি গবেষণা সূত্রে জানানো হয়, রাজধানী ঢাকার ৯.৮% কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। বস্তিতে বসবাসকারীদের মধ্যে এ হার ছিল ৫.৭%।
জিনগত সংক্রামক রোগ বিস্তার নিয়ে করা আরেক গবেষণার কথাও জানানো হয় অনুষ্ঠানে। এর আওতায় দেশে ছড়িয়ে পড়া সার্স কোভ-২ ভাইরাসের ১৯টি ভিন্ন ধরন বা বংশক্রম শনাক্ত করা গেছে।
এরমধ্যে, বাংলাদেশে ভাইরাসটির অভিযোজিত প্রধান তিনটি স্থানীয় সংস্করণ হচ্ছে; বি .১.১, বি .১.২.২৫ এবং বি.১.৩৬ ।
বি .১.১ এবং বি .১.২.২৫ বংশ-বৈশিষ্ট্যের ভাইরাস সারাদেশের আটটি বিভাগেই ছড়ায়। কিন্তু, বি.১.৩৬ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চাট্টগ্রাম বিভাগেই সীমাবদ্ধ ছিল।
আইইডিসিআর- এর পরিচালক এবং শীর্ষ গবেষক তাহমিনা শিরিন বলেছেন, গবেষণায় দেখা গেছে কোভিড -১৯ ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে বিদেশি উৎস থেকে আসে এবং মার্চের মধ্যেই ভাইরাসটি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল।
তিনি জানান, জিনগত তথ্যানুসারে ভারত, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দেশ থেকে বাংলাদেশে সার্স কোভ-২ ভাইরাস ছড়িয়েছে।