দু'মাস সাগরে ভেসে টেকনাফে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা, মৃত্যু ২৮ জনের
মালয়েশিয়ার উদ্দেশে সাগরে উঠে প্রায় ৫৫ দিন চেষ্টা চালিয়েও ওই দেশে স্থান না পেয়ে টেকনাফ উপকূলে ভিড়েছে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার। সাগরে ভাসা অবস্থায় না খেয়ে মারা যায় ২৮ জন রোহিঙ্গা।
বুধবার রাত ৮টার দিকে ট্রলারটি কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার জাহাজচুরা এলাকায় ভিড়েছে। খবর পেয়ে কোস্টগার্ড এবং পুলিশের সদস্যরা এসে তাদের উদ্ধার করে সৈকতের বালুচরে জড়ো করে ঘিরে রেখেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হুমায়ুন চৌধুরী।
এরা সবাই উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, টেকনাফের নয়াপাড়া, শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে দাবি করেছে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা।
ভেসে আসা রোহিঙ্গারা জানান, গত ৫৫ দিন আগে তারা বিভিন্ন ক্যাম্পের লোকজন ট্রলারে করে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে টেকনাফ নোয়াখালী ঘাট থেকে যাত্রা করেন। প্রায় তিন দিন পর তারা মালয়েশিয়া সীমান্তে পৌঁছে যান।
কিন্তু মালয়েশিয়া পুলিশ তাদেরকে তাড়া করলে ৫০ দিন ধরে সাগরে ভাসতে থাকেন তারা। এক পর্যায়ে ২৮ জন রোহিঙ্গা না খেয়ে মারা যান। পরে বাধ্য হয়ে তারা আবারও বাংলাদেশের দিকে চলে আসেন।
এ অবস্থায় ট্রলারে থাকা নারী ও শিশুরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। খাবারও প্রায় শেষ হয়ে আসে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে ট্রলারের মাঝিকে সৈকতে ভিড়াতে বলেন তারা। তিনিও সৈকতে ট্রলারটি ভিড়িয়ে দেন। এ সময় অনেক রোহিঙ্গা দ্রুত নেমে পালিয়ে যান বলেও দাবি করেন তারা।
তাদের দেয়া তথ্য মতে, ট্রলাটিতে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ৪৪২ জন যাত্রী উঠেছিল। তার মাঝে ২৫০ জনের অধিক নারী ও শিশু রয়েছে।
এদিকে,সৈকতে রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলার ভিড়ার খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও টেকনাফ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করে জড়ো করে রাখেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের সৈকতের চরে ঘিরে রেখেছে পুলিশ সদস্যরা।
কোস্টগার্ডদের টেকনাফ স্টেশন কর্মকর্তা লে. এম সোহেল রানা জানান, রোহিঙ্গা বোঝাই একটি বড় ট্রলার টেকনাফের জাহাজপুরা এলাকায় ভেড়ার খবরে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৩ শতাধিক রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। তারা বেশ কিছুদিন আগে মালয়েশিয়ার আশায় সাগর পাড়ি দিয়ে পৌঁছালেও সেখানে ভিড়তে পারেনি।
বাহাড়ছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) লিয়াকত আলী বলেন, উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের এখনও গণনা করা শেষ হয়নি। আগে তাদের মানবিক বিষয়গুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। পরে বিস্তারিত জানা যাবে।
