নেটওয়ার্ক টাওয়ার বিক্রি করবে রবি, শীঘ্রই হবে চুক্তি
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন অপারেটর রবি আজিয়াটা তাদের সকল মোবাইল টাওয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিক্রির জন্য চারটি টাওয়ার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের একটিকে বেছে নিতে চলেছে রবি।
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুসারে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রবির একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, শীঘ্রই চুক্তি স্বাক্ষর হতে চলেছে।
বর্তমানে রবির মালিকানাধীন ২ হাজার ৪৭০টি টাওয়ার রয়েছে।
যেসব কারণে রবি টাওয়ার বিক্রি করছে
- মোবাইল অপারেটরদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি
- টাওয়ার ব্যবস্থাপনার খরচ হ্রাস
- এককালীন আয়ের সুযোগ
এর আগে, ২০১৫ সালে ইডকটো বাংলাদেশ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছে ৫ হাজার ২৫৮টি টাওয়ার বিক্রি করে রবি।
টেলিকম খাতের আরেক বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকও একই চিন্তা করছে। মূল ব্যবসায় মনোযোগ দিতে নিজেদের মালিকানাধীন প্রায় ৮ হাজার টাওয়ার নিলামে বিক্রির কথা ভাবছে বাংলালিংক।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এভাবে আগাতে থাকলে দেশের টেলিকম অপারেটরগুলোর টাওয়ার ভাগাভাগি করে নেওয়ার সুযোগ বাড়বে।
এছাড়া, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কমার পাশাপাশি এককালীন আয়ের সুযোগও সৃষ্টি হবে বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করতে না চাইলেও রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেন, "টেলিকম খাতের পরিপক্কতা বিবেচনায় টাওয়ার ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমে অপারেটররা বিনিয়োগের সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারবে।"
"টাওয়ার ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে, আমরা সহজেই দেশের টাওয়ার শেয়ারিং নীতিমালা অনুসারে টাওয়ার সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারব। রবি দীর্ঘদিন ধরেই এ বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আমরা ডিজিটাল ভিশনকে শক্তিশালী করতে চাই এবং এজন্য টাওয়ার ভাগাভাগি করে নিতে প্রস্তুত।"
২০০৭ সালে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের মধ্যে টাওয়ার ভাগাভাগির মাধ্যমে নেটওয়ার্ক অবকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে টাওয়ার শেয়ারিং নীতিমালা তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়।
অতিরিক্ত টাওয়ার সংখ্যা হ্রাস ও বিদ্যুৎ জ্বালানির ওপর থেকে চাপ কমানোর পাশাপাশি ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হয়।
মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বিধা নিরসনে দেশের টেলিকম নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ সকল মোবাইল টাওয়ার ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার লক্ষ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স প্রদান করে।
বর্তমানে, বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটররা দেশের মাত্র ৪ হাজার ১৪৮টি টাওয়ার ভাগাভাগি করে ব্যবহার করে, যা মোট টাওয়ারের ১৬ শতাংশ।
৩০ শতাংশ টাওয়ার ভাগাভাগি করে ব্যবহারের মাধ্যমে অপারেটরদের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে রবি।
অন্যদিকে, গ্রামীণফোন এবং বাংলালিংক নিজেদের টাওয়ারের মাত্র ১৭ থেকে ১৯ শতাংশ টাওয়ার শেয়ার করে।
দেশে বিদ্যমান মোট ৩৬ হাজার ৮৬৬টি টাওয়ারের মধ্যে ২৪ হাজার ৪২৫টি টাওয়ারের মালিকানা মোবাইল অপারেটরদের হাতে রয়েছে।
১৯৯৭ সাল থেকে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরগুলো টাওয়ার ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে।
টাওয়ার ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইডকটোর ৮ হাজার ৫০০টি টাওয়ার, এবি হাই টেকের ২৫০টি টাওয়ার এবং সামিটের কাছে ১০০টি টাওয়ারের মালিকানা রয়েছে।