ন্যাশনাল ব্যাংকের ব্যাখ্যা প্রত্যাখান করেছে এক্সিম ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের অফিসিয়াল প্যাডে আইনজীবীর বক্তব্য আইনত সমর্থনযোগ্য নয় বলে মনে করেন এক্সিম ব্যাংকের নিয়োগকৃত আইনজীবী মিয়া মোহাম্মদ কাউছার আলম।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ওই আইনজীবী তার লিখিত জবাবে উল্লেখ করেন, ২৬ মে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন হক শিকদার ও দিপু হক শিকদার কর্তৃক অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা ঘটনায় সৃষ্ট মামলার প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ন্যাশনাল ব্যাংকের নিয়োগকৃত আইনজীবী আব্দুল বাছেত মজুমদার কতৃক প্রদত্ত ব্যাখ্যা গত ২৭ মে বিভিন্ন পত্রিকায় ছাপা হয়, যার প্রেক্ষাপটে ওই মামলার বাদী এবং এক্সিম ব্যাংকের পরিচালক লে. কর্নেল (অব) সিরাজুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তাকে আইনজীবী নিয়োগ দেন এবং নিয়োগদাতার নির্দেশনা অনুযায়ী তিনি ওই প্রতিউত্তর জানান।
দ্য লিগ্যাল এডজ নামের ল' ফার্মের প্যাডে লেখা ওই জবাব ২৮ মে বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল ব্যাংক ও তাদের নিয়োগকৃত আইনজীবীর বরাবর পাঠানো হয়।
এতে তিনি বলেন, "ওই মামলায় বাদী ন্যাশনাল ব্যাংকের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনেননি। ন্যাশনাল ব্যাংকের স্বপ্রণোদিত বিবৃতি অপ্রাসঙ্গিক এবং প্রকৃত ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা মাত্র।"
প্রতিউত্তরে মিয়া মোহাম্মদ কাউছার আলম আরও লিখেছেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বাছেত মজুমদারের স্বাক্ষরিত বিবৃতি ন্যাশনাল ব্যাংকের প্যাডে বিস্ময়কর এবং আইনত সমর্থন যোগ্য নয়।
এছাড়াও আইনজীবী বাছেত মজুমদারের ওই বিবৃতিতে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে এক্সিম ব্যাংকের জনৈক পরিচালকের ঋণ নেওয়া বা তার মেয়ের নামে ঋণের আবেদন বা বাদীর ঋণ নেওয়া এবং উপযুক্ত জামানত না থাকার বিষয়টি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক উল্লেখ করে এক্সিম ব্যাংকের আইনজীবী কাউছার আলম তার জবাবে লেখেন, মামলার ঘটনার সাথে এসবের লেশমাত্র সম্পর্ক নেই।
"আশ্চার্যজনক যে, একটি পাবলিক ব্যাংক জনগনের বিশ্বাস ও আস্থার প্রতি বিন্দুমাত্র না তাকিয়ে অবান্তর বিষয়ের অবতারণা করে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংক খাতকে অস্থিতিশীলকারী এবং অপরাধীদের সহায়তা করে বিবৃতি দিয়ে এই বৈশ্বিক করোনা দুর্যোগের সময়ে ব্যাংক খাত এবং ওই ব্যাংককেই কলুষিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যদি কোনো ঋণ নিয়ে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তার দায় ওই ব্যাংককেই নিতে হবে," বলা হয় ওই জবাবে।
এছাড়াও ঘটনার বারো দিন পরে মামলা দায়ের করার বিষয়েও বাছেত মজুমদার তার মক্কেলের বরাত দিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন তার জবাবে এক্সিম ব্যাংকের আইনজীবী বলেন, বাদী সিরাজুল ইসলাম এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে আলোচনা করেই মামলা দায়ের করেছেন এবং মামলা দেরিতে দায়ের করার কারণ মামলার বিবরণীর যথাযথ স্থানে উল্লেখ রয়েছে।
এছাড়া মামলার স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ না থাকার বিষয়েও ন্যাশনাল ব্যাংকের আইনজীবী যে প্রস্ন তুলেছেন তার জবাবে কাউছার আলম বলেন, স্বাক্ষ্য ও প্রমাণ আইনী প্রক্রিয়ায়ই উপস্থাপন করা হবে।
তবে কাউছার আলম এটাও উল্লেখ করেন, ন্যাশানাল ব্যাংক একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি, এই ব্যাংকের বিরুদ্ধে আক্রান্তদের কোনো অভিযোগ নেই এবং এই ব্যাংকের কোনো পরিচালকের সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে গত ৭ মে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজ হোসেনকে পাঁচ শ' কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে বন্ধকী জমি দেখাতে নিয়ে যান রন হক শিকদার ও দিপু হক শিকদার। তবে প্রস্তাবিত ঐ বন্ধকী জমির দাম কম বলায় প্রথমে এক্সিম ব্যাংকের এমডির ওপর গুলি বর্ষণ এবং পরে ঔ দুই শীর্ষ কর্মকর্তকে অপহরণ ও নির্যাতনের আভিযোগ এনে গত ১৯ মে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করা হয়।