পানির স্রোতে শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর সংযোগ সড়কে ধস
তিস্তার পানির স্রোতে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় শেখ হাসিনা তিস্তা সেতুর উত্তরাংশে রুদ্রেশ্বর এলাকার প্রায় দেড়শ মিটার সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। এতে রংপুর-কালিগঞ্জ রুটে লালমনিরহাটে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম জানান, গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যার পর থেকে ক্রমেই ধসে যেতে থাকে ওই এলাকার সংযোগ সড়কটির প্রায় দেড়শ মিটার এলাকা। রাত সাড়ে ১১টায় রাস্তাটির ওই অংশের অর্ধেকই ধসে যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এলাকা পরিদর্শন করলেও সংস্কারে কোনো উদ্যোগ এখনো নেয়নি। এ কারণে স্থানীয়রা সেখানে বালুভর্তি করে বস্তা ফেলছেন।
রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি জানান, হঠাৎ করেই পানি বেড়ে গেছে তিস্তায়। এতে অববাহিকার নিম্নাঞ্চল অঞ্চলের মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠেছে। ভেসে গেছে হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল-সহ অনেক গবাদিপশু। জীবন বাঁচিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছিলেন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। নষ্ট হয়েছে ৫৫ হাজারেরও বেশি হেক্টর জমির আমন ফসল। ভেসে গেছে প্রায় ১০ হাজার পুকুরের মাছ।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, বুধবার ভোর ছয়টায় তিস্তার পানি ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার পর বাড়তে বাড়তে ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে আসে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও লণ্ডভণ্ড হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন বাঁধ। পানি উন্নয়ন বোর্ড রাত থেকেই জরুরি মেরামত কার্যক্রম শুরু করেছে।
এদিকে, পানি ঢুকে পড়েছে নিলফামারীর ডিমলা, জলঢাকা, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালিগঞ্জ, আদিতমারি সদর, রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছা, কুড়িগ্রামের রাজারহাট, উলিপুর, চিলমারি এবং গাইবান্ধার গাইবান্ধা, সুন্দরগঞ্জের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে। ফলে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। উঠতি আমন ধান তলিয়ে গেছে পানির নিচে।
পানি উঠেছে রংপুরের লক্ষ্মীটারীর বাগেরহাট আশ্রয়ন প্রকল্পসহ নোহালী, কোলকোন্দ, গজঘন্টা মর্নেয়া, কাউনিয়ার বালাপাড়া, টেপামধুপুর, পীরগাছার ছাওলা, তাম্বুলপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলে। পানিবন্দি মানুষের যাতায়াত খাওয়া-দাওয়া নিয়ে চরম সংকট বিরাজ করছে। সংকট শুকনা খাবারের। পয়ঃনিষ্কাশন এবং লেট্রিন ব্যবস্থাও ধসে পড়েছে। ভুক্তভোগী মানুষেরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দেওয়ায় মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।