প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিতে প্রয়োজনে পাসপোর্ট আটকে রাখা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
বিপজ্জনক ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সংক্রমণ ঠেকাতে দক্ষিণ আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশ থেকে আসা প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। কোয়ারেন্টিন থেকে কেউ পালালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এজন্য প্রয়োজনে কোয়ারেন্টিনের সময় পাসপোর্ট আটকে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত বিদেশগামীদের করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষাগার পরিদর্শনে গিয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
করোনাভাইরাসের নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমণ ঠেকাতে আফ্রিকার দেশগুলো থেকে ফিরলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর আগে কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হলেও, অনেকেই পুরো সময় না থেকে পালিয়ে যেত। এবার সে বিষয়ে সরকার কঠোর হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, 'অনেক ইরেসপনসিবল লোক যারা নিজের কথা, দেশের কথা ভাবে না; হোটেল থেকে বেরিয়ে গেছে, ঘোরাফেরা করেছে, বাড়িতে চলে গেছে। এই বিষয়টা আমরা জেনেছি। আমরা এ বছর কঠোর অবস্থানে যাচ্ছি। দরকার হলে যতদিন কোয়ারেন্টিন থাকবে, ততদিন আমরা তাদের পাসপোর্ট আটকে রাখব।
মন্ত্রী আরো বলেন, সামরিক বাহিনী পুলিশ এবং আমাদের স্বাস্থ্য বিভাগও কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি তদারক করবে। আরেকটি জিনিস আমরা করব, যে হোটেল থেকে কোনো রোগী বেরিয়ে যাবে, সেই হোটেলকেও আমরা পেনাল্টিতে নিয়ে আসব।'
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওমিক্রন নিয়ে সবাই একটু চিন্তিত। আমরাও সতর্ক, কিন্তু আমরা প্যানিক করব না। আমরা জানতে পেরেছি, এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে যায়। সংক্রমণ হলেও এর লক্ষণ মৃদু। লক্ষণগুলো ডেল্টার মতো ভয়ানক নয়। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। আমাদের কাছে চার কোটি ভ্যাকসিন আছে। আপনারা সবাই ভ্যাকসিন নেন।
জাহিদ মালেক বলেন, 'আমাদের টার্গেটেড পপুলেশনের ৫০ শতাংশ লোক ভ্যাকসিনেটেড হয়ে গেছে। মৃত্যু ও সংক্রমণের সংখ্যা কমে গেছে। ফলে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ভালো আছে। বিদেশে ভালো ইমেজ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশের ওপরে কোনও জায়গায় নিষেধাজ্ঞা নেই। আমরা সবদিক থেকে ভালো আছি।'
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে এমন দেশগুলো থেকে আসলেও ৪৮ ঘণ্টা আগে নমুনা পরীক্ষা করে রিপোর্ট নিয়ে আসতে হবে। বয়স্ক কোমর্বিড রোগীদের বুস্টার ডোজের প্ল্যানিং ও তালিকা তৈরি হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
বর্তমানে বিমানবন্দরের টার্মিনাল-২ এর ২ হাজার বর্গফুট জায়গাজুড়ে বিদেশগামীদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর পরিবর্তে বিমানবন্দরের গাড়ি পার্কিংয়ের ভবনের দোতলায় ৩৬ হাজার বর্গফুট জায়গায় হচ্ছে নমুনা পরীক্ষাগার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই ল্যাব তৈরি হয়ে গেলে বিদেশগামীদের করোনাভাইরাস নমুনা পরীক্ষায় ভোগান্তি কমবে। কাজ শেষ হয়ে গেলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে নতুন ল্যাব চালু করা যাবে। এখন পর্যন্ত ৬টা ল্যাবে টেস্ট করা হচ্ছে। যাত্রী বাড়লে ল্যাবও বাড়ানো হবে।