বছরে তামাকজনিক রোগে মারা যায় দেশের ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ
তামাকজাত দ্রব্যের অতিরিক্ত ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যান্সার, বক্ষব্যাধি এবং অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে।
করোনা মহামারির এই সময়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে কঠোরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করতে এর ছয়টি ধারা সংশোধন করা জরুরি।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফারস হোটেলে 'তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োজনীয়তা' শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরাম, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো-ফ্রি কিডস এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় আলোচনা সভাটি আয়োজন করে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর ডা. আহমদ খাইরুল আবরার।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৩.৭৮ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্র ও গণপরিবহনসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় আরও ৩৮.৪ মিলিয়ন মানুষ। তাছাড়া বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের তুলনায় ধূমপায়ীদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা ১৪ গুণ বেশি।
অনুষ্ঠানে বক্তারা মত দেন, তামাকের ক্ষতির হাত থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
এদিকে ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো-ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, "দেশে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বিভিন্ন দিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, কিন্তু তারপরও আইনটির কিছু জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে। এই দুর্বলতাগুলো সংশোধন করা হলে, আইনটি আরো কার্যকর হবে"।
সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর দাবি জানান বক্তারা। এগুলো হলো মহামারির সময়ে সব ধরনের পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনকে শতভাগ তামাকমুক্ত করা, দোকানপাটে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানিসমূহের কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে মুদ্রিত স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বৃদ্ধি করা এবং সিগারেটের সিংগেল স্টিক তথা খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।