অকালমৃত্যু ঠেকাতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন জরুরি: ডা. এবিএম আবদুল্লাহ
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেছেন, অকালমৃত্যু কমাতে দ্রুত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা প্রয়োজন।
তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের ফলে দেশে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ জন মানুষ মারা যান উল্লেখ করে তিনি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫ (২০১৩ সালে সংশোধিত)-এর সংশোধন আহ্বান করেন।
বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত 'তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বর্তমান অবস্থা ও করণীয়' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই সভায় ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, 'তামাক খাত থেকে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব পায়, তার কয়েকগুণ বেশি টাকা তামাকজনিত রোগের চিকিৎসায় খরচ হয়।'
'আইন না থাকায় মানুষ অন্যায় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আইন থাকলে মানুষের মধ্যে ভয় কাজ করবে। ব্যবসায়ীরা কেবল নিজেদের স্বার্থ দেখেন,' বলেন তিনি।
তামাকের কোনো ভালো গুণ নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, 'সিগারেট মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর আক্রান্ত করে। ধূমপান প্রতিরোধে আইন করতে হবে। আইন করতে গেলে প্রতিবন্ধকতা থাকবেই। তারপরও এ আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।'
এ সময় তিনি তামাক, জর্দা, ও গুল নিষিদ্ধের আহ্বান জানান।
মতবিনিমিয় সভায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম বলেন, 'আইনে যা-ই থাকুক, সব থেকে বড় কথা জনসচেতনতা বাড়ানো। দোকানে বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করতে হবে।'
ডা. খুরশীদ আলম বলেন, 'আমরা প্রচারের ক্ষেত্রেই জোর দিতে চাই। এ জন্য সরকারি বিজ্ঞাপনে ধূমপানের সতর্কতা বা ভয়ের একটা লাইন যুক্ত করা, স্বাস্থ্য বিষয়ক সকল প্রচারে ধূমপান সতর্কতা থাকা উচিত।'
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্তি মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর বলেন, 'তামাকজাত দ্রব্যের ওপর ট্যাক্স বাড়ানো দরকার। যাতে তামাকজাত দ্রব্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থাকে। এতে তামাকপণ্য ব্যবহারের হার কমে যাবে।'
এছাড়া ট্যাক্স দ্বিগুণ করা গেলে ৮–১০ হাজার কোটি টাকা এই খাত থেকে স্বাস্থ্যের বাজেটে আসতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম-এর সভাপতি মো. রাশেদ রাব্বির উপস্থাপনায় মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন সোহেল। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।