বন্যায় মানিকগঞ্জের নার্সারি ব্যবসায়ীদের লোকসান তিন কোটি টাকা
করোনাভাইরাসের কারণে গত কয়েক মাস ধরে মন্দা ব্যবসায় মানিকগঞ্জের নার্সারি মালিকরা। এর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছে বন্যা। বন্যার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে নার্সারীতে বেড়ে ওঠা বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লাখ গাছের চারা। এতে কমপক্ষে তিন কোটি টাকার লোকসান হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় নার্সারী ব্যবসায়ীদের।
মানিকগঞ্জে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশো নার্সারি রয়েছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রজাতির বনজ এবং ফলজ গাছের চারা বিক্রি করা হয় এসব নার্সারিতে। স্থানীয়ভাবে বেশ চাহিদা ও ভালো বাজারদরের কারণে লাভবান ছিলেন জেলার নার্সারি ব্যবসায়ীরা।
তবে করোনাকালীন সময়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে তাদের। বন্ধ হয়ে যায় নার্সারির বিকিকিনি। এরপরও সময় মতো পরিশোধ করতে হয় নার্সারিতে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন। এরই মধ্যে আবার আঘাত হানে বন্যা। জেলার প্রায় অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা পড়েন লোকসানে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনা এবং ব্যাংক লোনের দাবি জানান তারা।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লা বাজার এলাকার বীথি নার্সারির পরিচালক আল আমিন জানান, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রজাতির কয়েক লাখ বনজ এবং ফলজ গাছের চারা রয়েছে তাদের। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হুট করে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় নার্সারি। এতে কিছু চারা রক্ষা পেলেও মরে যায় অধিকাংশ গাছের চারা। ক্ষতিগ্রস্থ চারাগুলোর আনুমানিক বাজারদর প্রায় ১৫ লাখ টাকা বলে দাবি করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ জেলা শহরের ল'কলেজ মাঠ সংলগ্ন এমডিপিওডি নার্সারির ম্যানেজার তারেক হোসেন বলেন, ১২০ প্রজাতির বিভিন্ন গাছের চারা রয়েছে তার নার্সারিতে। করোনার শুরু থেকে বিকিকিনি একদম বন্ধ। এরপর বন্যার পানিতে কমপক্ষে ২০ হাজার গাছের চারা মরে গেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া বেশ কষ্টকর বলেও জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন, নার্সারি করার জন্য সাধারণত উঁচু সমতল জায়গা প্রয়োজন। তবে চাহিদা অনুযায়ী বড় আকারের এমন জায়গা পাওয়া কষ্টকর। যে কারণে বন্যার পানিতে জেলার ৯০ শতাংশ নার্সারি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনা সুদে ব্যাংক লোন বা সরকারি প্রণোদণার দাবি করেন তিনি।
মানিকগঞ্জ জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি মাসুদুর রহমান কামাল বলেন, জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে তিনশো নার্সারি রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কমপক্ষে দুই হাজার পরিবার। বন্যার পানিতে জেলায় নার্সারি মালিকদের প্রায় ২০ লাখ গাছের চারা মরে গেছে। যার আনুমানিক বাজারদর কমপক্ষে তিন কোটি টাকা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ততরের উপ-পরিচালক শাহজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, বন্যায় মানিকগঞ্জে ক্ষতিগ্রস্ত নার্সারি ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করা করা হচ্ছে। সরকারিভাবে তাদেরকে সাহায্য করার সুযোগ থাকলে অবশ্যই তারা সেই সুবিধা পাবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।