বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়াবে অস্ট্রেলিয়া: টিফা স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী
ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট (টিফা) স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট (টিফা) স্বাক্ষর শেষে বক্তব্য প্রদানকালে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, "অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ায় ৮০৪.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে। একইসময়ে, দেশটি থেকে বাংলাদেশ আমদানি করেছে ৫৯৬.৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।"
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "কোভিড-১৯ এর কারণে বিগত দু'বছর বাণিজ্য আশানুরূপ হয়নি। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা সফর বিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার এজন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। আশা করা যায়, টিফা স্বাক্ষরের ফলে উভয় দেশ উপকৃত হবে এবং বেসরকারি খাতে আগ্রহ বাড়বে।"
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে স্বাক্ষর করেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রেড, ট্যুরিজম এন্ড ইনভেস্টমেন্ট মিনিস্টার ডান টিহান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তিনি শুভেচ্ছা জানান।
অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে ডান টিহান বলেন, "টিফা স্বাক্ষরের মাধ্যমে উভয় দেশের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্লাস্টিক ও শিক্ষাসহ বেশকিছু সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে।"
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, "বাংলাদেশ মুজিব জন্মশতবর্ষ উদযাপন করছে। অস্ট্রেলিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রদানকারী চতুর্থ দেশ। এজন্য বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে যাচ্ছে।"
তিনি ভ্যাকসিন উৎপাদকারী দেশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়াকে মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশে অনুদান হিসেবে কোভিড ভ্যাকসিন সরবরাহের অনুরোধ জানান।
টিপু মুনশি আরও বলেন, "অস্ট্রেলিয়া বিগত ২০০৩ সাল থেকে বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি এবং কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা প্রদান করছে, এজন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণের পরও অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে প্রদত্ত বাণিজ্য সুবিধা অব্যাহত রাখবে এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় এলডিসি গ্রুপের প্রস্তাবে সমর্থন করবে বলে আশা করছি। অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় রপ্তানি বাজার।"
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমাই ব্রুয়ার। এছাড়া, ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য প্রদান করেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ শফিউর রহমান। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব(রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কমকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।