বাবুনগরী-মামুনুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা
ভাস্কর্য নিয়ে সমালোচনা ও হুমকি দেওয়ায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হকসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলার আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালতে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট আবদুল মালেক ওরফে মশিউর মালেক এবং মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল মামলার আবেদন করেন।
মশিউর মালেকের মামলায় মাওলানা মামুনুল হককে একমাত্র আসামি করা হয়। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের মামলায় জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা মামুনুল হক এবং সৈয়দ ফয়জুল করিমকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে রোববার (৬ ডিসেম্বর) বিকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর রাষ্ট্রবিরোধী মামলার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জিশান মাহমুদ।
আবেদনে বলা হয়, ১৩ নভেম্বর খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মামুনুল হক ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, ভাস্কর্য নির্মাণের পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে তিনি আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটাবেন এবং ওই ভাস্কর্য ছুঁড়ে ফেলবেন। অন্যদিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক মাহফিলে বলেন, কোনো ভাস্কর্য তৈরি হলে তা টেনে হিঁছড়ে ফেলে দেওয়া হবে। তাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য গত কয়েকদিন যাবৎ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়ে আসছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, তাদের ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তব্যের রেশ ধরে কুষ্টিয়ায় তাদের অনুসারীরা গত ৪ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান স্বীকৃত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের ডান হাত ও পুরো মুখমণ্ডল এবং হাতের অংশবিশেষ ভেঙে ফেলে।
মামলার আর্জিতে আরও বলা হয়, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হানা বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল। মাওলানা মামুনুল হক ও জুনায়েদ বাবুনগরীর প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত হেনেছে দুর্বৃত্তরা। যা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অপমানজনক, অগ্রহণযোগ্য এবং তাদের এইরূপ ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য এবং কার্যকলাপ বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিরাগ ও ঘৃণা সৃষ্টির অশুভ অভিপ্রায়ে করা হয়েছে বিধায় মাওলানা মামুনুল হক গংরা দণ্ডবিধির ১২৩ক/১২৪ক/৫০৫ ধারার আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা করতে আগ্রহী বলে আবেদনে উল্লেখ করেন ওই আইনজীবী।