ভ্যাকসিন কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে চায় ভারত
বাংলাদেশে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেছে ভারত।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন । গত বছর ভারতের বিতর্কিত ধর্মভিত্তিক নাগরিক আইন পাস হওয়ার পর এটিই তাদের প্রথম বৈঠক।
আলোচনার শুরুতেই বাংলাদেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যাপারে ভারত বিশেষ ভাবে নজর দিবে বলে জানান নরেন্দ্র মোদি।
বাংলাদেশ ও ভারত অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক ভ্যালু চেইন আরও সমৃদ্ধ করতে পারবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া চিলাহাটি- হলদিবাড়ি রেল সংযোগ উদ্ভোধনের ঘোষণা দেন তিনি।
গত বছর ভারতজুড়ে নাগরিক আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হলে ভারত সফর বাতিল করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। নতুন আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ সহ তিনটি দেশের অমুসলিম অভিবাসীরা ধর্মীয় সহিংসতার শিকার হলে তাদের ভারতের নাগরিকত্ব দেয়া হবে।
এরপর থেকেই ঢাকার সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছে দিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এবছর দুইবার বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। চীনের সাথে সীমান্তবর্তী উত্তেজনা চলাকালীন সময়ে গত আগস্টে দ্বিতীয় বারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসেন তিনি।
গতকাল বাণিজ্য, কৃষি ও জ্বালানি সম্পর্কিত মোট ৭টি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে দেশ দুটি। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভারত-বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার।
বৈঠকের পর একটি যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তিস্তার পানি বন্টনের অন্তর্বর্তী চুক্তির কথা তুলে ধরেছেন শেখ হাসিনা। এ বিষয়ে 'ভারতের আন্তরিকতা' এবং মোদি সরকারের 'অব্যাহত প্রচেষ্টা' আছে বলে জানান নরেন্দ্র মোদি।
ভারত-বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর ও আবদুল মোমেন আগামী সেপ্টেম্বরে অন্তর্বর্তীকালীন এ চুক্তি চূড়ান্ত করার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, দীর্ঘদিনের ব্যর্থ তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি ও বিতর্কিত নাগরিক আইনের কারণে কয়েক দশকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আঁচ লেগেছিল। কোভিড-১৯ দুটি দেশকে আবারও একত্র করেছে।
গত নভেম্বরে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতির ঘোষণার পরই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সাথে ৩ কোটি ডোজের চুক্তি করেছে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লি.।
- সূত্র: ব্লুমবার্গ