রপ্তানি বৃদ্ধিতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতায় প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
দেশে বহুমুখী পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির জন্য নতুন বাজারে সৃষ্টিতে ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “সরকার রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন পণ্য উৎপাদন এবং বিশ্বজুড়ে নতুন বাজার খুঁজতে সর্বদা তৎপর রয়েছে। এ বিষয়ে আপনারা সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা পাবেন। আমরা এ বিষেয়ে আপনাদের আশ্বাস দিতে পারি।”
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শোতে (বিএলআইএসএস) প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এ অনুষ্ঠানে ভারত, চীন ও পাকিস্তানসহ প্রায় ২০টি দেশের ৩০০টিরও বেশি অংশগ্রহণকারী তাদের পণ্য প্রদর্শন করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসায়ে জড়ায় না বরং ব্যবসায়ীরা যাতে নিজেদের ব্যবসা ভালোভাবে করতে পারে সে সুযোগ তৈরি করে দেয়।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারীদের সাথে বর্হিবিশ্বের আমদানিকারকদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য আমরা অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছি।”
“ফলে গত এক দশকে পাটের পণ্যকে ছাড়িয়ে চামড়াজাত পণ্য দেশের দ্বিতীয় রপ্তানি পন্য হিসাবে পরিণত হয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরো রপ্তানি খাতের জন্য সমান সুযোগ ও নীতিমালা সংক্রান্ত সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে। “বিদ্যমান সকল বৈষম্যমূলক বাধা দূর করা হবে।”
হাসিনা বলেন, বহুমুখী রপ্তানির অংশ হিসেবে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতকে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও জাতীয় শিল্প বিকাশের কৌশলে অগ্রাধিকারমূলক খাত হিসাবে ধরা হয়েছে। “এ জন্য চামড়া ও চামড়া জুতা শিল্পের বিকাশের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, মাত্র এক দশক আগেও এ খাতে দেশের বেশিরভাগ রপ্তানি আয় আসতো মূলত কাঁচামাল হিসাবে চামড়া রপ্তানি থেকে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত দশ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের দেয়া প্রণোদনা ও ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা তৈরির জন্য জুতা ও চামড়া পণ্যের কারখানার সম্প্রসারণ হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকার হাজারীবাগের পরিবেশ বিপর্যয়ের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ট্যানারিগুলোকে সাভারের একটি আধুনিক শিল্প নগরীতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বিদেশি ক্রেতা এবং বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্পে বিশেষত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, “এখানে বিনিয়োগ করে আপনারা অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় ভালো মুনাফা করতে পারবেন… আমরা এটা বলতেই পারি, কারণ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা বিভিন্ন ধরণের সুবিধা দিচ্ছি যা অন্য কারও পক্ষে দেয়া সম্ভব না। এর বাইরে বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে সস্তা শ্রমিক তো রয়েছেই।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চামড়াজাত পণ্য ও জুতা শিল্প থেকে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য অর্জনের জন্য কমপক্ষে আগামী পাঁচ বছরের জন্য আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হবে।
‘আন্তর্জাতিক মান ও লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডাব্লিউজি) সার্টিফিকেট অনুসরণ করে চামড়াজাত পণ্য ও জুতার কারখানা স্থাপনের জন্য সাভারের চামড়া শিল্প নগরীতে বর্ধিত প্রকল্পের আওতায় কমপক্ষে ১৫০ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হবে,’ বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, বাণিজ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্য সচিব ড. মোহাম্মদ জাফর উদ্দিন, চামড়াজাত পণ্য এবং জুতা প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (এলএফএমইএবি) সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দেশের চামড়া শিল্পের প্রসার নিয়ে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।