রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাইডেন প্রশাসনকে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান ঢাকার
শুক্রবার মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ক 'নিউলাইন ইনস্টিটিউট অন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি'র সাথে মতবিনিময়কালে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাইডেন প্রশাসনকে নেতৃত্ব দেয়ার আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বাড়িয়ে তুলতে এবং বাইডেন প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানাতে নতুন মার্কিন প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন বর্তমানে ওয়াশিংটন ডিসি সফর করছেন।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আজিম ইব্রাহিম অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
এ সময় ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনই এ সমস্যা সমাধানের একমাত্র উপায়। অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ, ওআইসি ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা সরাসরি এবং অনলাইনে যোগ দেন। অনুষ্ঠানটি ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচার হয়।
শ্রোতাদের প্রশ্নোত্তর পর্বে ড. মোমেন কোভিড পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য নিয়ে সরকারের নেয়া ব্যবস্থাগুলো তুলে ধরে বলেন, একজন রোহিঙ্গাও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি।
এ সময় কুতুপালং ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে প্রত্যাবাসনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন মন্ত্রী। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারের ওপর আরও বেশি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিতে বাইডেন প্রশাসনকে আহ্বান জানান মোমেন।
এ সময় রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারে বিশেষ দূত নিয়োগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব দেন তিনি। পরে সিএফআর আয়োজিত 'বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং রোহিঙ্গা ইস্যু' শীর্ষক ভার্চুয়াল ইভেন্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন।
অধিবেশনটি পরিচালনা করেন রাষ্ট্রদূত আইসোবেল কোলম্যান।
অধিবেশনে ড. মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের চলমান টিকাদান কর্মসূচি, দক্ষ পরিচালনা এবং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তার সাম্প্রতিক আলোচনার বিষয় উল্লেখ করে তিনি দু'দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বের বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং কৌশলগত পর্যায়ে এটি আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
একই দিনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইলিনয় থেকে মার্কিন কংগ্রেসওমেন জান স্কাওকস্কির সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন।
ড. মোমেন রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার জন্য মার্কিন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি মিয়ানমারের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের মতো আরও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মার্কিন সরকারকে প্রভাবিত করতে মার্কিন আইন প্রণেতাদের সহায়তার অনুরোধ করেন।
গত মঙ্গলবার ড. মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তার আগে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে টেলিফোনে আলোচনা করেন।