লকডাউন ভেঙে জুবায়ের আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল
লাখো মানুষের অংশগ্রহণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে খেলাফত মজলিশের নায়েবে আমির মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজার নামাজ। আজ শনিবার সকাল ১০টায় সরাইল উপজেলার বেড়তলা এলাকার জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। বৈরি আবহাওয়া ও চলমান লকডাউন ভেঙেই দেশ বরেণ্য এই আলেমের জানাজায় অংশ নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রাকে করেও মানুষ এসে জড়ো হন বেড়তলায়।
গত ১১ এপ্রিল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে লকডাউন ঘোষণা করে স্থানীয় প্রশাসন। এরপর থেকেই সামাজিক দূরত্ব ও সাধারণের চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এছাড়াও গত ১৬ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেন।
তারপরও মাদরাসা মাঠে জায়গা না হওয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অন্তত দুই কিলোমিটার অংশে জানাজার নামাজে অংশ নেন হাজার হাজার মানুষ। জানাজার নামাজে ইমামতি করেন জুবায়ের আহেমদ আনসারীর দ্বিতীয় ছেলে মাওলানা আসাদুল্লাহ গালিব। পরে জানাজা শেষে মাদরাসা প্রাঙ্গণেই মরদেহ দাফন করা হয়।
জানাজার নামাজে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জামিয়া ইসলামিয়া ও ইউনুছিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মুফতি মুরাবারক উল্লাহ, সাইখুল হাদিস আল্লামা সাজিদুর রহমারন, বিশিষ্ট আলেম আল্লামা হাসান জামির, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মুফতি মাহফুজুল হক, যুব মজলিশের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক প্রমুখ অংশ নেন।
এ প্রসঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তারা আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। বর্তমানে লকডাউন পরিস্থিতি চলছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) তাদেরকে আমরা জানিয়ে দিয়েছি এবং তারা আমাদেরকে জানিয়েছে নির্ধারিত নিয়ম মেনেই সীমিত পরিসরে তাদের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন। এখন প্রকৃত বিষয়টি কি আমাকে খতিয়ে দেখতে হবে।
সরাইল থানার ওসি সাহাদাত হোসেন জানান, জানাজায় অংশ নিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়া অন্যান্য জেলা থেকেও মানুষ এসেছে। এতো মানুষ হবে সেটি আমরা বুঝতে পারিনি। লোকজন আসতে শুরু করার পর আমাদের আর কিছু করার ছিলো না।
গতকাল শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মার্কাসপাড়ায় নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন জুবায়ের আহমেদ আনসারী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে ও চার মেয়ে রেখে গেছেন।