লাগামহীন নির্মাণ ব্যয়, নতুন রেট-শিডিউল তৈরির দাবি সরকারি ঠিকাদারদের
লাগামহীনভাবে নির্মাণ উপকরণের বাজারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের চলমান বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। একইসাথে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এসব নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এসব নির্মাণকাজে নিয়োজিত বিভিন্ন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বর্তমান বাজারদরের সাথে সরকারি রেট-শিডিউল সমন্বয় করে নতুন রেট-শিডিউল তৈরির দাবি জানিয়েছে।
ঠিকাদারদের এই দাবি না মানলে চলমান প্রকল্পগুলোর কাজ বন্ধ করারও হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বলছে, একটি ইউনিফাইড রেট অব শিডিউল প্রস্তুতের কাজ চলছে। রেট শিডিউলে দ্রব্যমূল্য ও উপকরণের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে।
চলমান যত প্রকল্প
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে এখন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। যার মধ্যে নির্মাণ প্রকল্পই ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার।
নির্মাণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার নির্মাণ প্রকল্প চলমান। সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ১৯ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ২৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে ২৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় ১৩ হাজার ২৯৮ কোটি টাকার প্রকল্প চলমান।
যে হারে উপকরণের দাম বাড়ছে
নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত আবশ্যক উপকরণগুলোর বাজারদর নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী বিভিন্ন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও বাজার থেকে খবর নিয়ে জানা গেছে, এক বছর আগে বাজারে প্রতি টন ৭৫ গ্রেডের রডের দাম ছিল ৫০-৫২ হাজার টাকা। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮২ হাজার টাকায়। সেই হিসেবে এক বছরে রডের দাম বেড়েছে টনে কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা।
এক বছর আগে প্রতি টন আমদানি পাথর বিক্রি হতো ৩২০০-৩৩০০ টাকায়। টনপ্রতি ১২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন প্রতি টন পাথর বিক্রি হচ্ছে ৪৩০০-৪৫০০ টাকা।
বর্তমানে প্রতি বস্তা সিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪২০ টাকা। যা আগে ছিল ৩৬০-৩৮০ টাকার মধ্যে।
আগে প্রতি হাজার ইটের মূল্য ছিল ৫০০০-৬০০০ টাকা। যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯০০০-১০০০০ টাকায়।
আগে ১৫০ কেজির প্রতি ড্রাম বিটুমিন বিক্রি হতো ৬৩০০ টাকায়। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫০০-১০০০০ টাকায়।
একই সাথে বেড়েছে নির্মাণ শ্রমিকের মজুরিও। আগে একজন নির্মাণ শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ছিল ৫০০ টাকা। ৩০০ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতিটি নির্মাণ শ্রমিকের বেতন দাঁড়িয়েছে ৮০০ টাকা।
এই অবস্থায় নির্মাণ কাজে সরকারি শিডিউলের চেয়ে ৩৫-৪০ শতাংশ দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে সরকারি প্রকল্পগুলোর কাজ স্থবির হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
যে পরিমাণ বাড়তে পারে প্রকল্প ব্যয়
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সামছুল হক টিবিএসকে বলেন, "যেভাবে ঠিকাদাররা দাবি করছে, তা কিছুটা যৌক্তিক। কারণ মানসম্মত নির্মাণ কাজ নিশ্চিত করতে হলে, বর্তমান বাজারের সাথে প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ সমন্বয় করা উচিত।"
তবে, বাজারদর বৃদ্ধির অযুহাত দিয়ে বারবার প্রকল্প ব্যয় বাড়ানোর সুযোগ তৈরির পথও বন্ধ করতে হবে। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্টদের উচিত বিষয়টি ভালোভাবে নজরে নেওয়া, যোগ করেন ড. সামছুল হক।
তিনি আরও বলেন, "এখন যেহেতু বাজার যাচাই করে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন উপকরণের দাম ৩০-২৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সাথে সমন্বয় করেই নতুন রেট শিডিউল প্রণয়ন করার কাজটি দ্রুত করা উচিত, নাহলে প্রকল্পগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।"
অতীতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে ড. সামছুল হক বলেন, "নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী প্রকল্প ব্যয় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়তে পারে। কারণ ঠিকাদারা নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে তাদের গতানুগতিক প্রকৃতি অনুযায়ী ব্যয় বাড়িয়ে নেবে। আবার প্রকল্পের মেয়াদও বাড়াবে।"
বাংলাদেশ ঠিকাদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেজবাউর রহমান রতন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের অধীনে তালিকাভুক্ত ঠিকাদাররা ঊর্ধ্বতনদের সাথে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, "চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ৭০ শতাংশের জন্যই ২০১৮ সাল বা তার পরের রেট শিডিউল ধরে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। তখনকার চেয়ে এখন নির্মাণ সামগ্রীর বাজারদর ৪০-৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।"
সরকার এখনকার বাজারদরের সাথে সরকারি রেট শিডিউল সমন্বয় করে নতুন শিডিউল না দিলে ঠিকাদাররা কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হবে।
বাধাগ্রস্ত হতে পারে প্রকল্পের অগ্রগতি
পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মো. আফজাল হোসেন বলেন, উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে নির্মাণের খরচ বাড়বে, প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যাবে। এর ফলে প্রকল্পের অগ্রগতি কিছুটা বাধাগ্রস্তও হতে পারে।
তিনি জানান, পদ্মা রেল লিংক প্রকল্পের অধিকাংশ কাজেরই নির্মাণ চুক্তি হয়ে গেছে। এসব চুক্তির মূল্য ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো বা বাড়ানোর সুযোগ থাকে। এর বেশি ব্যয় বাড়াতে হলে প্রকল্প সংশোধন করে একনেকের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে (সওজ) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধীনে সড়ক নির্মাণে বর্তমানে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ২৩২টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার কাজ করছে।
এর মধ্যে আব্দুল মোনেম লিমিটেড, স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড, মনিকো লিমিটেড, কনকর্ড প্রগতি কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, মীর আখতার হোসেন লিমিটেড, তমা কনস্ট্রাকশন এবং হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেডসহ শীর্ষ ২০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এসব নির্মাণের কাজ করছেন।
আব্দুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাঈনুদ্দিন মোনেম টিবিএসকে বলেন, উপকরণের দাম বাড়ায় নির্মাণ কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কারণ যে রেট শিডিউল অনুযায়ী চুক্তি ছিল এখন তার চেয়ে উপকরণের দাম অনেক বেশি। এখানে ঠিকাদাররা নিজের ঘর থেকে অর্থ বরাদ্দ দেবে না। সরকার এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বরাদ্দ সমন্বয় করবে।
সওজের অধীনে এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর সড়ক থেকে চার লেনের মহাসড়ক নির্মাণে ১৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দে একনেকের অনুমোদন আছে। ২০২৪ সালের মধ্যে এই প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা। এখন ৬ হাজার কোটি টাকার কাজ চলমান এই প্রকল্পে।
নির্মাণ উপকরণের দাম বৃদ্ধির প্রভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে কী না এখনই বলা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. ওয়ালিউর রহমান।
তিনি বলেন, প্রতিটি প্রকল্পেই উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে 'প্রাইস কনটিনজেন্সি' খাতে বরাদ্দ দেয়া থাকে। আবার কিছু প্রকল্পে পরিসংখ্যান ব্যুরোর নির্মাণ উপকরণ মূল্যসূচকের ভিত্তিতে প্রয়োজনে বাড়তি অর্থ পরিশোধ করতেও বরাদ্দ থাকে। এর ভিত্তিতে ঠিকাদারকে প্রয়োজনে বাড়তি অর্থ ছাড় করা যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রাইস কনটিনজেন্সি আর উপকরণ মূল্য সূচকের সঙ্গে সমন্বয় রেখে বাড়তি চাহিদা প্রকল্পের ডিপিপি বরাদ্দের চাইতে বেড়ে গেলে বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হয়।
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে।
"আমরা ২ শতাংশ প্রাইস কনটিনজেন্সির মাধ্যমে কিছু প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে পারব, তবে অন্যান্য প্রকল্পগুলোর জন্য অতিরিক্ত খরচ যোগ হবে।"
আপাত সমাধান হিসেবে, যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে বড় প্রকল্পের বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই অর্থনীতিবিদ।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের অধীনে ১৯ হাজার কোটি টাকার নির্মাণ প্রকল্প চলমান। গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর, স্থাপত্য অধিদপ্তর এবং হাউজিং এন্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ চলছে।
বাংলাদেশ গণপূর্ত ঠিকাদার সমিতির প্রায় ১০০০ সদস্য এসব নির্মাণকাজে ঠিকাদারি করছে।
সংগঠনটির সেক্রেটারি বাবুল আক্তার বাবলা টিবিএসকে বলেন, আমরা ইতোমধ্যে গণপূর্ত সচিবের সাথে কথা বলেছি এ বিষয়ে। দ্রুত সমাধান না হলে চলমান নির্মাণ কাজ বন্ধ করা ছাড়া কোনো পথ নেই। আশা করি গণপূর্ত বিভাগ আশু ব্যবস্থা নেবে।
তিনি জানান, গণপূর্তের অধীনে এখন প্রায় ২০০টি প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে প্রায় ৬০টির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে।
গণপূর্ত সচিব মোঃ শহীদ উল্লা খন্দকার টিবিএসকে বলেন, ঠিকাদারা ইতোমধ্যে আমাদের সাথে কথা বলেছে এই বিষয়ে। প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি করা গণপূর্ত বিভাগের একার কাজ নয়। তাই সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকায় ১৪৩টি প্রকল্প চলমান। এর মধ্যে ৭০টি নির্মাণ প্রকল্প। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার লোকাল সড়ক, সেনেটারি, ড্রেনসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ।
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশীদ খান বলেন, অনেক ঠিকাদার স্থানীয় সরকার প্রশাসনের কাছে উপকরণের মূল্য বৃদ্ধির কথা বলেছে। কাজ বন্ধ করারও অনেকগুলো অভিযোগ এসেছে। এখন চাইলেই প্রকল্পে ব্যয় বাড়ানো সম্ভব নয়। কারণ এসব কাজ প্রতিটি স্থানীয় সরকারের পর্যায় থেকে টেন্ডার হয়। কিছু কাজ প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত হয়।
সরকার কি ভাবছে
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, সরকার সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জন্য একটি ইউনিফাইড রেট অব শিডিউল প্রস্তুতের কাজ করছে। এটি প্রণয়ন হলে, এর ফলে একই ধরনের কাজে ভিন্ন ভিন্ন সংস্থার ভিন্ন দাম ধরার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, নতুন এ রেট শিডিউলে দ্রব্যমূল্য ও উপকরণের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হবে। এ শিডিউল তৈরির পরই বলা যাবে প্রকল্পের ব্যয় কতটা বাড়বে।
চট্টগ্রামে প্রকল্পের চলমান কাজ বন্ধের হুমকি
নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে প্রকল্প ব্যয় না বাড়ালে চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংস্থার প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কাজ বন্ধের হুমকি দিয়েছে সেখানকার আড়াই হাজার ঠিকাদার।
গত ২২ নভেম্বর চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই হুমকি দেয়।
চট্টগ্রামে এলজিইডি, শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিষদ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনসহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে।
বগুড়ার স্থানীয় সরকার বিভাগের ঠিকাদার আব্দুর রহিম সরকার বলেন, আমরা এখন যে কাজগুলো করছি সেগুলো ২০১৮ সালের রেট অনুযায়ী। কিন্তু এর মধ্যে নির্মাণ সামগ্রীর দাম অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে আগের রেটে উন্নয়ন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই বিষয়ে ঢাকায় ঠিকাদারেরা একটি পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। আমরাও স্থানীয়ভাবে কথাবার্তা বলছি। এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাজশাহী ঠিকাদারেরা নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ওয়াকিবহাল ইতিমধ্যে তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন, আরো আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসার চেষ্টা করছেন। এদের একজন মেসার্স জাহেদা কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী তরিকুল ইসলাম এলজিইডি রাজশাহীর স্থায়ী ঠিকাদার।
তিনি বলেন, উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। এজন্য আমাদের কাজে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার তাগিদ থাকলেও লোকসানের কারণে আমরা কাজ শেষ করতে পারছি না। সরকারিভাবে ঠিকাদারদের ভর্তুকি না দিলে আমাদের কাজ বন্ধ রাখা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।