সরিষা বীজের নামে পপি বীজ আমদানি, ১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা পাচারের চেষ্টা
মালয়েশিয়া থেকে সরিষা বীজ আমদানির ঘোষণা দিয়ে ঢাকার প্রতিষ্ঠান আজমিন ট্রেড সেন্টার আমদানি করেছে ৪২ টন আফিম তৈরির উপকরণ পপি বীজ। চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য চালানটি খালাস প্রক্রিয়ায় আটক করে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এই ঘটনায় আমদানিকারক ১৪ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বিদেশে পাচারের চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকালে কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম জানান, পুরান ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আজমিন ট্রেড সেন্টার সরিষা বীজ ঘোষণায় মালয়েশিয়া থেকে দুই কন্টেইনার পণ্য আমদানি করেন। আমদানিকারকের মনোনীত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনাল পণ্য চালানটি খালাসের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে গত ১৮ এপ্রিল বিল অব অ্যান্ট্রি দাখিল এবং ঘোষিত পণ্য সরিষা বীজের শুল্ক বাবদ ১,৪২,৪৯৭ টাকা পরিশোধ করে।
শুল্ক-করাদি পরিশোধ শেষে পণ্যচালানটি খালাস গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।
কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খালাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে কাস্টম হাউস চট্টগ্রামেরর অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম। পরবর্তীকালে শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় আমদানিকারকের ঘোষিত ৫৪ টন সরিষা বীজের স্থলে ১২ টন সরিষা বীজ এবং ৪২ টন আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ (পোস্তা দানা) পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, একই রকম লেখা ও একই রঙের বস্তায় কন্টেইনারের সামনের অংশে সরিষা বীজ ও পেছনের দিকে পপি বীজ পাওয়া যায়। পণ্যের বর্ণনা সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চিয়তার লক্ষ্যে পণ্যের নমুনা ঢাকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষা শেষে প্রেরিত নমুনাকে পপি বীজ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেয় সরকারি প্রতিষ্ঠানটি।
আফিমসহ বিভিন্ন রকমের মাদক তৈরিতে পপি বীজ ব্যবহার করা হয় বলে তা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ী ৪২ টন পপি বীজের বিক্রয় মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা হলেও সরিষা বীজের মূল্য বাবদ এলসি'র মাধ্যমে ২২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি। অর্থাৎ পণ্যের অবশিষ্ট মূল্য অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে পরিশোধ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ।
অসত্য ঘোষণায় নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করায় সংশ্লিষ্টদের আসামী করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এছাড়া, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে কাস্টম হাউসের অ্যান্টি মানিলন্ডারিং ইউনিট।
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনালের প্রোপ্রাইটার অখিল চন্দ্র মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি 'রং নম্বর' বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।