সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করা সেই ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া দুই সাংবাদিককে অবরুদ্ধ ও শারিরিকভাবে হেনস্তা করার ঘটনায় মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সোমবার ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “১ ফেব্রুয়ারি সংগঠিত এক অনাকাঙ্খিত ঘটনায় জড়িত থাকায় ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শহিদুল ইসলাম খান রিয়াদকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হল।”
গত শনিবার গেন্ডারিয়ার ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের একটি ভোটকেন্দ্রে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নির্বাচনের খবর সংগ্রহ করতে গেলে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মাহবুব মমতাজী ও দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সাংবাদিক নুরুল আমিন জাহাঙ্গীরকে শারিরিকভাবে হেনস্তা ও সোয়া ঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন ছাত্রলীগের এই নেতা।
ভুক্তভোগী দুই সাংবাদিক ওইদিন জানান, বেলা পৌঁনে ১১টার দিকে তারা নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহের জন্য ওই ভোটকেন্দ্রে যান। কেন্দ্রের ৬৯৮ ও ৬৯৯ নম্বর কেন্দ্রের দোতলা এবং তিনতলার বুথে যান তারা। সেখানে একটি বুথ থেকে ভোট দিতে না দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ এই দুই সাংবাদিকের কাছে করেন একাধিক ভোটার।
সাংবাদিকরা আরও জানান, তারা ওই ভোটারদের ছবি নেন এবং তাদের বক্তব্য নেন। এরই মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ তাদের পিছন থেকে এসে আচমকা কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। নির্বাচন কমিশন থেকে দেওয়া ভোট পরিদর্শন কার্ডও ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করেন। এসময় তাদের জামার গলার ধরে টানাহেঁচড়া করেন। মোবাইলফোন না দিলে অস্ত্রের ভয়ও দেখান রিয়াদ।
এক পর্যায়ে তিনি নিজে এবং তার সঙ্গে থাকা অন্যদের দিয়ে সাংবাদিকদের পকেট থেকে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন এবং তাদের সোয়া ঘণ্টা ধরে ভোট কেন্দ্রে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
বেলা ১২টার দিকে পুলিশের ওয়ারি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) হান্নানুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এলে ওই দুই সাংবাদিক বিষয়টি তাকে জানান। এরপর তিনি রিয়াদকে মোবাইল দিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। পরে রিয়াদ পুলিশ কর্মকর্তাদের সামনেই সাংবাদিকদের মোবাইলের পাসওয়ার্ড নিয়ে যাবতীয় তথ্য মুছে দেন। এরপর মোবাইলফোন ওই দুই সাংবাদিককে দিয়ে দেন।
মোবাইলের তথ্য মুছে দেওয়ার সময় পুলিশের সামনে রিয়াদের কোমরে অস্ত্র বহন করতে দেখা যাচ্ছিল, তার কালো জ্যাকেটের এক পাশে অস্ত্রের একটি অংশ বেরিয়েছিল।